মাঠ বিক্রি থেকে তোলাবাজির অভিযোগ, পানিহাটির পুরপ্রধানকে ইস্তফার নির্দেশ ফিরহাদের ...
আজকাল | ১২ মার্চ ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেআইনিভাবে মাঠ বিক্রি থেকে তোলাবাজি। আরও বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। পানিহাটির পুরপ্রধান মলয় রায়কে নিয়ে দলের অন্দরেও বাড়ছিল ক্ষোভ। অবশেষে মলয়কে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক তথা পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষের ঘর থেকে ফিরহাদ মলয়কে ফোন করেন। মলয়ের বিরুদ্ধে পানিহাটি এলাকার অমরাবতী মাঠ অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। রয়েছে তোলাবাজির অভিযোগও।
প্রসঙ্গত, পানিহাটি পুরসভার অধীনে থাকা প্রায় ৮৫ বিঘার অমরাবতী মাঠ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অভিযোগ, ওই মাঠের বেশ কিছুটা অংশ পুরোপ্রধান মলয় রায় প্রোমোটারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে অভিযোগপত্র পৌঁছয়। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি খোঁজখবর নিতে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দেন। জেলাশাসকের মাধ্যমে মুখ্যসচিব তথ্য সংগ্রহ করেন। মুখ্যসচিব সেই রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠিয়ে দেন। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী মলয়ের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অমরাবতীর ৮৫ বিঘার ওই মাঠে আর কোনও আবাসন নির্মাণ চলবে না। পুরো জমি রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মলয়ের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠেছে, পুরসভার ১২৫ বছর পূর্তি উৎসব উপলক্ষে তিনি তোলাবাজি শুরু করেছেন। আর সেক্ষেত্রে পুরসভাকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছেন। কোনও নাগরিক পুরসভায় পরিষেবার জন্য এলে তাঁর কাছ থেকে বেআইনিভাবে ১০০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছে জোর করে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের খবর, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি মলয়কে পুরপ্রধানের পথ থেকে সরানো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা পাওয়ার পরেই মঙ্গলবার ফিরহাদ টেলিফোনে মলয়কে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মলয় যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করেন, সেক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
ফিরহাদের নির্দেশ পাওয়ার পর মলয় দলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'আমি এখনও কোনও লিখিত নির্দেশ পাইনি। টেলিফোনে মৌখিকভাবে আমাকে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যদি আমার পদত্যাগ চেয়ে থাকেন, তাহলে সেটাই হবে। তবে আমি একটা কথাই বলব, দলের একাংশ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। আমি আজ ষড়যন্ত্রের শিকার হলাম।'
মলয়ের পরে পানিহাটির পুরপ্রধান কে হবেন তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোড় জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, পুরপ্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন পানিহাটির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোমনাথ দে। যদিও আরও কয়েকটি নাম পুরপ্রধান হওয়ার দৌড়ে ভাসছে।