• ফরাসি শাসন মুক্তির ৭৫তম বর্ষ, চন্দননগরে পথচলা শুরু হল হেরিটেজ রিসার্চ সেন্টারের ...
    আজকাল | ১২ মার্চ ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি: চলছে চন্দননগরের ফরাসি শাসন মুক্তির ৭৫তম বর্ষ। বাস্তব রূপে চন্দননগরের ইতিহাসের পাশাপাশি হেরিটেজ সংরক্ষণ এবং মূল্যায়নের লক্ষ্যে গৃহীত প্রচেষ্টা। মঙ্গলবার চন্দননগর কলেজ অডিটরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী এবং ডেপুটি মেয়র মুন্না আগরওয়াল কলেজের এই প্রচেষ্টাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন। 

    আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করে হেরিটেজ রিসার্চ সেন্টার, চন্দননগর। প্রাথমিকভাবে এই রিসার্চ সেন্টার চন্দননগরের স্পর্শযোগ্য এবং স্পর্শাতীত হেরিটেজ সংরক্ষণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে। গত ১৮ এপ্রিল ২০২২ আন্তর্জাতিক হেরিটেজ দিবসে চন্দননগরের মেয়রের উপস্থিতিতে যাত্রা শুরু করে চন্দননগর কলেজের ঐতিহ্য অধ্যয়ন কেন্দ্র। পরবর্তীকালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী সমিতির সভায় হেরিটেজ অধ্যয়ন কেন্দ্রের প্রস্তাবকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে চন্দননগর কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিষ সরকার জানিয়েছেন, টানা তিন বছর ধরে হেরিটেজ সংরক্ষণে গবেষণা চলেছে। তবে সেই রিসার্চের পরিধি কলেজের মধ্যেই আবদ্ধ ছিল। এদিন সেই রিসার্চ সেন্টারকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হল সকলের জন্য। অর্থাৎ নাগরিক সমাজকে এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হল। এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চন্দননগর কলেজ প্রাক্তনী এ্যাসিসিয়েশন। ফলে যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই রিসার্চ সেন্টারের লক্ষ্য চন্দননগরের সকল স্তরের মানুষকে এই গবেষণার অন্তর্ভুক্ত করা। কলেজ বাউন্ডারির বাইরে বেরিয়ে এই গবেষণাকে সমাজের চর্চার মধ্যে আনা। 

    তিনি মনে করেন, ১৯৫০ সালের ২ মে চন্দননগর স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতা অর্জনের প্ল্যাটিনাম জয়ন্তীর প্রাক্কালে এই ঐতিহ্য অধ্যয়ন গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, ঐতিহ্য সংরক্ষণের এক অঙ্গীকার। ফরাসি আমলে প্রতিষ্ঠিত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠা। পরবর্তী সময়ে ছাত্র-শিক্ষকদের বিপ্লবী কর্মকাণ্ড। সেই নিরিখে টানা ২৩ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা। আবার অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলা। বস্তুত চন্দননগর কলেজের বিবর্তনের যে ইতিহাস সমৃদ্ধ, রোমাঞ্চকর পাকদণ্ডীর এক সংক্ষিপ্ত পরিক্রমা নিয়ে প্রকাশিত বই 'মন হিস্টরি, চন্দননগর কলেজ'। 

    লিখেছেন, দেবাশিষ সরকার, অবিন চক্রবর্তী, চন্দনা ব্যানার্জি, সৌমী চ্যাটার্জি, সোমা ভট্টাচার্য্য। আত্মকথার আদলে লিখিত এই বইয়ে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রমবিকাশ ও অগ্রগতির এই অসামান্য আখ্যান। তুলে ধরা হয়েছে, সাম্প্রতিক কয়েক বছরের পুনর্গঠন এবং সংস্কারের ইতিহাস। সরকারি কলেজ কেন্দ্রীয় বিচারে ন্যাকের তরফে এ+ গ্রেড প্রাপ্তি। পাশাপাশি সশস্ত্র বিপ্লবীদের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গীকৃত একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হয়েছে কলেজের হেরিটেজ ভবনে। যে সংগ্রহশালা ইতিমধ্যেই দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষিত করেছে। ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ দুটি বই 'কলেজ ডুপ্লেক্স টু চন্দননগর কলেজ: দ্যা জার্নি ফ্রম রেভলিউশান টু ইমেন্সিপেশন' এবং 'চন্দননগর এ সিটি অফ হেরিটেজ'। এদিন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রকাশিত তিনটি বই তুলে দেওয়া হয় চন্দননগরের মহা নাগরিক এবং উপ মহা নাগরিকের হাতে। ছবি: পার্থ রাহা
  • Link to this news (আজকাল)