• ফের ট্রলিতে ভরে মৃতদেহ পাচারের চেষ্টা, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে হাতেনাতে ধৃত
    এই সময় | ১২ মার্চ ২০২৫
  • ফের ভয়াবহ ঘটনা শহরে। কুমোরটুলির পর এ বার কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। কুমোরটুলি কাণ্ডে অভিযুক্ত মা ও মেয়ের কায়দাতেই ট্রলিতে মৃতদেহ ভরে পাচারের চেষ্টার পথে হাতেনাতে ধৃত দুই যুবক। অ্যাপ ক্যাব চালকের তৎপরতাতেই রহস্যভেদ। টহলদারি পুলিশের তৎপরতায় ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার এক অভিযুক্ত। পরে সকালে মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট থেকে অন্যজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

    পুলিশ সূত্রে খবর, নীল রঙের ট্রলি ব্যাগে এক যুবকের মৃতদেহ ঢুকিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মৃতের মুখ টেপ দিয়ে সম্পূর্ণ আটকানো ছিল। হাত-পাও ছিল প্লাস্টিক টেপ দিয়ে বাঁধা। মৃতের নাম ভাগা রাম। বাকি ধৃত দুই ব্যক্তির নাম করণ সিং এবং কৃষ্ণপাল সিং৷ প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, টাকা-পয়সা নিয়ে সমস্যাতেই এই খুন।

    জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ৯টার কিছু পরে দমদম নাগেরবাজার থেকে দুই ব্যক্তি ক্যাব বুক করেন। চালক জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে ছিল আকাশি রঙের একটি ট্রলি ব্যাগ। নিমতা দিয়ে মুড়াগাছা ব্রিজ হয়ে ঘোলা মহিষপোতার কাছে কল্যাণী এক্সপ্রেস-এর ধারে অন্ধকার একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করাতে বলে ওই দুই ব্যক্তি। এমন জায়গায় লোকেশন হওয়ায় প্রথমেই খটকা লাগে চালকের। তার পর তিনি লক্ষ্য করেন, সুটকেসটি নামাতে বেশ বেগ পাচ্ছেন দুই যুবক। ক্যাব চালকের সরাসরি তাদেরকে এমন জায়গায় নামার কারণ জিজ্ঞেস করেন। একইসঙ্গে ট্রলিব্যাগে কী আছে তাও জানতে চান। তখন ক্যাব চালকের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ে দুই অভিযুক্ত।

    অভিযোগ, চালককে থামাতে অতিরিক্ত টাকাও দিতে চান দুই অভিযুক্ত। ততক্ষণে দুই ব্যক্তির উপর সন্দেহে রাস্তায় টহলদারি পুলিশ ভ্যানকে থামান চালক। ঝামেলা দেখে তাদেরকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে, গাড়ির মধ্যে থাকা দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন পালিয়ে যায়। পরে তাকে সকালে গ্রেপ্তার করা হয়।

    এর পর ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে আসে যুবকের মৃতদেহ। মিলেছে খুনের অস্ত্রও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ঘোলা থানা ও নাগেরবাজার থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে। মৃতদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, রাজস্থানের বাসিন্দা ভাগারাম। তারা কাপড়ের ব্যবসায়ী। করণ এবং কৃষ্ণপাল, ভাগারামের থেকে আট লক্ষ টাকা পেতেন। সেই টাকা না দেওয়াতেই এই খুন।

    ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, গিরিশ পার্কের যে বাড়িতে ভাড়া থাকত তারা, সেখানেই হয়েছে এই খুন। প্রথমে কফিতে মাদক মিশিয়ে ভাগারামকে অচৈতন্য করে ফেলা হয়। তার পর তাঁকে শ্বাসরোধ করে এবং পরে গলার নলি কেটে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। মৃতদেহ কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে ফেলে রাজস্থান পালিয়ে যাওয়ার ছক ছিল ধৃতদের বলে দাবি। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

  • Link to this news (এই সময়)