যাদবপুরের গোলমালের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করার সময়ে অভিযুক্ত ছাত্রদের মোবাইল ফোন জমা রাখছে। এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এক পড়ুয়া। আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘FIR-এ নাম থাকা অভিযুক্তের ক্ষেত্রে তিনি ছাত্র হলেও, তাঁকে কোনও রিলিফ দিলে সেটা খারাপ বার্তা দেবে।’ আইনজীবীদের দাবি, আদালত বোঝাতে চেয়েছে ছাত্র হলেও কোনও অভিযুক্তকে আদালত সুযোগ-সুবিধা দিলে তা সমাজের কাছে ভুল বার্তা তুলে ধরবে। আইনজীবীদের একাংশের মতে, সে ক্ষেত্রে অনেকেই মনে করতে পারেন, আদালতকে অভিযুক্ত ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন। যা অভিপ্রেত নয়।
তদন্তের স্বার্থে পুলিশের কাছে মোবাইল ফোন জমা রাখার বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া উদ্দীপন কুণ্ডু। এ দিন আদালতে তাঁর আইনজীবী বলেন, ‘মোবাইল ফোন ব্যক্তিগত ডিভাইস। সেখানে অনেক ব্যক্তিগত তথ্য আছে। সেগুলো পাবলিক বা জনসমক্ষে তুলে ধরায় আপত্তি আছে। সুপ্রিম কোর্টও মোবাইল ফোন ব্যক্তিগত ডিভাইস হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পুলিশ হেনস্থা করতে ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করছে। একজন ছাত্রের সঙ্গে এমন আচরণ পুলিশ করতে পারে কি?’
পাল্টা বিচারপতি বলেন, ‘আপনার মক্কেল FIR-এ নাম থাকা অভিযুক্ত। এই অবস্থায় কোর্ট কোনওভাবে এর মধ্যে ঢুকবে না।’ তবে আদালত একই সঙ্গে জানায়, একজন ছাত্রকে যাতে ওই মোবাইল ফোন জমা দিয়ে নতুন মোবাইল ফোন পড়াশোনার জন্য কিনতে না হয়, সেটাও পুলিশকে নিশ্চিত করতে হবে। আগামী ৪ এপ্রিল সব পক্ষকে হলফনামা জমা দিতে হবে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজন সংক্রান্ত একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ১৩ মার্চ পর্যন্ত অনুমতি ব্যতীত কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচির আয়োজন করা যাবে না। একদিন আগেই বুধবার সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করল আদালত। বরঞ্চ রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল করার জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।
১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, মন্ত্রীর গাড়িতে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন এক যাদবপুরের পড়ুয়া। এই ঘটনার মাঝেই মিছিলের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘১৩ মার্চ পর্যন্ত কাউকে ওই এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি যেন দেওয়া না হয়। অর্থাৎ, আদালতের অনুমতি ছাড়া ওখানে কেউ কর্মসূচি করতে পারবে না। আয়োজকদেরও নজর রাখতে হবে।’
তবে এ দিন আদালত জানায়, রায়ের ওই অংশ কার্যকর হয়েছে। এখন আর কোর্ট ওই দায়িত্ব নিজে নিতে চায় না। এখন থেকে রাজনৈতিক সংগঠন কিছু করতে চাইলে প্রশাসনকে জানাতে হবে। প্রশাসন আবেদন শুনে বিবেচনা করবে অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে। এখন থেকে প্রশাসন আগের মতো আবেদন গ্রহণ করে পদক্ষেপ করবে।