শীতল চক্রবর্তী ■ বালুরঘাট
কী অর্ডার দেবেন? চাইনিজ়, ভেজ না কন্টিনেন্টাল...। ‘মিষ্টি’ পৌঁছে যাবে আপনার টেবিলে। দক্ষিণবঙ্গের নদিয়ার কৃষ্ণনগরের একটি রেস্তোরাঁয় রোবট খাবার পরিবেশন করলেও উত্তরবঙ্গে এই প্রথম দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে খাবার পরিবেশন করবে রোবট বা যন্ত্রমানবী। গ্রাহকদের টেবিলে -টেবিলে তাঁদের চাহিদা মতো খাবার পৌঁছে দেবে সে। বালুরঘাটের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিজন কবিরাজ নামে এক হোটেলের ব্যবসায়ী আজ বুধবার উদ্বোধন করবেন তাঁর ‘রেস্টুরেন্ট রোবট’।
তাঁর কথায়, ‘আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে মানুষের মনে। আট থেকে আশি, সকলকে আনন্দ দিতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনের আগে থেকেই 'মিষ্টি'কে দেখার জন্য ভিড় করছেন অনেকে। সেলফি তোলারও আবদার করছেন। আমি হাতজোড় করে সকলকে না করেছি। বলতে খারাপও লাগছে। আবার উদ্বোধনের আগে কী করে ছবি তুলতে দিই বলুন তো!'
বিজন তাঁর রোবটের নাম দিয়েছেন মিষ্টি। রান্নার কুক রয়েছে চার জন। তাঁর রেস্টুরেন্টে ৪২ জনের বসার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। কেউ যদি খাবারের অর্ডার দেন, মিষ্টি গিয়ে বলবে, ‘আমি রয়েছি আপনার সঙ্গে। কী চাই বলুন।’ এই রোবট ওয়েটার কিনতে খরচ হয়েছে প্রায় চার লক্ষ টাকা। হায়দরাবাদ থেকে কিনে এনেছেন বিজন। রোবট ছাড়াও আগামীতে তিনি চালু করতে চলেছেন বাঁশের ট্রেন। এই ট্রেনে চেপে মিষ্টি বিভিন্ন টেবিলে ঘুরে ঘুরে ঘুরে খাবার দেবে। ইতিমধ্যে কলকাতার এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। খরচ হবে প্রায় দু'লক্ষ টাকা। বিজন বলেন, ‘বর্তমানে একটা রোবট নিয়েছি। এরপর আরও একটা কিনব। ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও ইনোভেশন নিয়ে আসব যা কেউ ভাবতেই পারবে না। সম্পূর্ণ হাইটেক টেকনোলজিতে তৈরি এই রোবট।’
রেস্তোরাঁর কর্মী গোপাল রবিদাস, সমীর সরকার বলেন, ‘মিষ্টির সঙ্গে আপাতত চার জন মহিলা কর্মী সবটা দেখভাল করবেন। সকলের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যই রোবটের নাম দেওয়া হয়েছে মিষ্টি। রোবট যেমন সকলকে আনন্দ দিয়ে খাবার পরিবেশন করবে, তেমনই সুস্বাদু খাবার তৈরির চেষ্টা করব আমরা।’
নদিয়ার কৃষ্ণনগর শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ভাতজাংলায় ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করে চার জন যন্ত্রমানবী। তাদের নাম অনন্যা। কিচেন থেকে খাবার নিয়ে তারা গেস্টদের টেবিলে পৌঁছে দেয়। কিচেন থেকে কম্যান্ড দিয়ে দিলে এক সঙ্গে চার জনের খাবার নিয়ে নির্দিষ্ট টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় তারা।
এ দেশেও রোবট ওয়েটারের দেখা মিলছে নয়ডা, আমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু, মাইসুরু এবং বেশ কিছু বড় শহরে। হায়দরাবাদের একটি রেস্তোরাঁয় গিয়ে রোবট ওয়েটার দেখে আইডিয়া মাথায় আসে বিজনের।