অয়ন ঘোষাল: পশ্চিমি থেকে উত্তর-পশ্চিমি শুকনো বাতাসের শাসন চলবে বাংলায়। আসছে 'হিট ওয়েভ কনডিশনে'র দিন। আর কয়েকদিন পরেই দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় তৈরি হবে ভয়ংকর পরিস্থিতি। ১৬ মার্চ থেকেই দক্ষিণের বেশ কিছু জেলায় তাপপ্রবাহের অনুরূপ পরিস্থিতি তৈরি হবে-- এই মর্মে সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
কালই দেখা গিয়েছিল আবহাওয়ার এক উলটপুরাণের খবর। সেই উলটপুরাণ জাতীয় আবহাওয়ায়। বরাবর শুষ্ক থাকা দিল্লি-সহ উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রচুর জলীয় বাষ্প-- জম্মু কাশ্মীর, লাদাখ, মুজফফরাবাদ, হিমাচলে অকাল বৃষ্টি। আর এসবের প্রভাব পড়ছে বঙ্গেও। এবার জানা গেল বাংলায় তাপপ্রবাহ তৈরির পরিস্থিতির কথা!
আগামী পাঁচদিন ধরেই দিনের তাপমাত্রা ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি করে বাড়তে থাকবে। উপকূল অঞ্চলের জেলাগুলিতে আপেক্ষিক আর্দ্রতা থাকবে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশের মতো। যেগুলি ভিতরের দিকে জেলা সেখানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ।
আর ১৬ মার্চে কী হবে? সেদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ৪০ ডিগ্রি হবে, বা তা ছাড়িয়েও যেতে পারে। খুব কম হলেও, তা থাকবে ৩৫ ডিগ্রির ঘরে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়ায়, পশ্চিম মেদিনীপুর।
কেন এরকম হচ্ছে? গতকালই ব্যাখ্যা মিলেছিল, জলীয় বাষ্প উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে ছোটনাগপুর মালভূমি পেরিয়ে বিহার হয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করার কথা। কার্যক্ষেত্রে হচ্ছে উল্টো। উত্তর-পশ্চিম ভারতেই সমস্ত জলীয় বাষ্প থেকে যাচ্ছে। বাকি উষ্ণ বাতাস এগিয়ে আসছে পূর্ব দিকে। বঙ্গে প্রবেশের সময় তার মধ্যে আর জলীয় বাষ্প কিছু থাকছে না। ফলে, মার্চেই বইছে তপ্ত গরম হাওয়া।
সঙ্গে আসাম থেকে রাজস্থান পর্যন্ত রয়েছে এক ঘূর্ণাবর্ত। ওদিকে ভুবনেশ্বর থেকে মালদহ পর্যন্ত রয়েছে দ্বিতীয় ঘূর্ণাবর্ত। এর জেরে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি, দক্ষিণে তীব্র গরম। এতটাই গরম যে, আশঙ্কা, দোলের দিনে কলকাতার পারদ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘর অতিক্রম করে ৩৬ ডিগ্রির ঘরেও প্রবেশ করতে পারে! ভাবা যায়! পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় দোলের দিনে পারদ ৩৭ ডিগ্রি অতিক্রম করে ৩৮-এর ঘরে পা রাখতে পারে বলেও আশঙ্কা।
কলকাতায় এই মুহূর্তে দিনের সর্বোচ্চ স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি। পশ্চিমাঞ্চলে এই মুহূর্তে দিনের সর্বোচ্চ স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি। স্বাভাবিকের তুলনায় ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা না বাড়লে খাতায়-কলমে তাকে তাপপ্রবাহ বলা যায় না। কিন্তু দোলের দিনে 'ফিল লাইক' বা তাপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি অনুভূত হতে পারে বলে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে।