অর্ণবাংশু নিয়োগী: 'জাস্টিস বাগচী'। কলকাতা হাইকোর্টের অলিন্দ থেকে ঘর, এই নামে তাঁকে একডাকে চেনে সবাই। সেই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। এবার হাইকোর্ট ছেড়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করতে চলেছেন। ২০২৫-এর মার্চে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন জয়মাল্য বাগচি। আগামী ২০৩১ সালে তিনি-ই দেশের প্রধান বিচারপতির আসনে বসবেন। ২০৩১-এ দেশের প্রধান বিচারপতি হবেন বাঙালি বিচারপতি বাগচি। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে ছিল বিচারপতি হিসেবে জাস্টিস জয়মাল্য বাগচির শেষ দিন। বিদায়ী ভাষণে তাঁর বিচারপতি জীবনের অনেক কথা এদিন ভাগ করে নেন জয়মাল্য বাগচি।
কলকাতা হাইকোর্টে বিদায়ী ভাষণে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, "আমি জন্মসূত্রে নবদ্বীপের বাসিন্দা। বাবা ছিলেন আইনজীবী আর মা ছিলেন ডাক্তার। গোটা স্কুলজীবন আমার দ্বন্দ্বে কেটেছে এই ভেবে যে আমি একজন আইনজীবী হব নাকি ডাক্তার। বিদ্যালয় জীবন কেটেছে অত্যন্ত শৃংখলার মধ্যে। কিন্তু আইন কলেজ আমাকে বাস্তব জীবন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করেছে।"
ঋণস্বীকার করে নিয়ে তিনি জানান, "সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের থেকে বিভিন্নভাবে আমি সহযোগিতা পেয়েছি।" বলেন, "আমি দেওয়ানি মামলা দিয়ে শুরু করি, কিন্তু ক্লায়েন্টরা আমাকে ফৌজদারি মামলাতেই বেশি পছন্দ করত।" জানান, একবার অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টেও তাঁকে বদলি করা হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বিচারপতি বাগচী বলেন, " আমাকে যখন অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টে বদলি করা হয়েছিল তখন সম্পূর্ণ নতুন একটা পরিবেশে গিয়ে পড়েছিলাম।"
২০২১-এর নভেম্বর থেকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। সে প্রসঙ্গে বিচারপতি বাগচি বলেন, "আমাকে আইনজীবী হিসেবে তৈরি করা এবং পরবর্তীতে বিচারপতি হিসেবে এই হাইকোর্টেই দীর্ঘদিন কেটেছে আমার। আমরা কবিতা লিখি না। আমরা জাজমেন্ট লিখি। তাই সেক্ষেত্রে আইনের প্রাধান্যটা বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হয়। আমি জানি কলকাতা হাইকোর্ট সাম্প্রতিককালে দেশের তৃতীয় হাইকোর্ট হিসেবে নজির স্থাপন করেছে মামলা-নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে।"
আরও বলেন, "আইনজীবীর সম্পর্কই বড় কথা নয়। সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে তাঁদের কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা। সেটাই প্রতিফলিত হয় প্রকৃত বিচার প্রক্রিয়ায়। আদালতে প্রকৃত বিচারের ক্ষেত্রে আদালতের কর্মচারীদের প্রভূত ভূমিকা রয়েছে।"