বেপরোয়া ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু যুবকের, আহত এক, প্রতিবাদে পথ অবরোধ-বিক্ষোভ খগড়পুরে
প্রতিদিন | ১৩ মার্চ ২০২৫
অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: বেপরোয়া একটি ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু এক যুবকের। আহত আরও এক। দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ- প্রতিবাদে উত্তপ্ত এলাকা। দিনের বেলায় ব্যস্ততার সময় এই রাস্তা দিয়ে ১০ চাকার উপর ভারী গাড়ি যাতায়াতে রাশ টানতে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। নামাতে হল পুলিশ বাহিনী। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুর গ্ৰামীণ থানা এলাকার জামনা-বারবেটিয়া রাজ্য সড়কের মাওয়া বাজারের কাছে। অবশেষে পুলিশের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়রা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম কালিপদ সাঁতরা। তিনি নারায়ণগড় থানার দুরিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি মেটালিক্স কারখানার ৭ নম্বর ইউনিটের কর্মী ছিলেন। এদিন অপর এক সহকর্মীকে বাইকে চাপিয়ে তিনি কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাওয়া বাজারে একটি জুতো দোকানের মালিক গোপাল জানিয়েছেন, জামনার দিক থেকে একটি ড্যাম্পার বারবেটিয়ার দিকে যাচ্ছিল। মাওয়া বাজারের কাছে রাস্তার ধারে বাইক দাঁড় করিয়ে দু’জন ফোনে কথা বলছিলেন। সেই সময় ডাম্পারটি বেপরোয়া গতিতে ছুটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই কালিপদ মৃত্যু হয়। আর জখম একজনকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জখম ব্যক্তিকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনার পর স্থানীয়রা মৃতদেহ রাস্তায় রেখে পথ অবরোধ করেন। তাঁদের দাবি, এই রাস্তায় সকাল ন’টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ১০ চাকার উপর ভারি গাড়ি যাতায়াত করতে দেওয়া যাবে না। রাস্তায় বাম্পার বসাতে হবে। দিতে হবে ব্যারিকেড। এই দাবিগুলি-সহ রাস্তার ধারে একটি স্পিড মিটার বসানোরও দাবি জানান তাঁরা। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার ওসি প্রণব পাত্রের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পথ অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য মানুষজনকে বোঝানো হয়। কিন্তু তিনটি দাবি পূরণের ব্যাপারে আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত পথ অবরোধ তুলবেন না বলে জানিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। তারপর খড়গপুরের এসডিপিও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। নামানো হয় র্যাফ। এদিকে এই পথ অবরোধের জেরে রাস্তার দুই প্রান্তে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে খড়গপুরের এসডিপিও ধীরাজ ঠাকুরের হস্তক্ষেপে প্রায় দুই ঘণ্টা পর পথ অবরোধ উঠে যায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
চকমকরামপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান নাজমুল খান বললেন , “এই রাস্তায় প্রায়ই দিন দুর্ঘটনা ঘটে। ১০ চাকার উপর ভারী গাড়িগুলি এমন বেপরোয়াভাবে যাতায়াত করে রাস্তায় চলাচল করতে রীতিমতো ভয় লাগে। এইদিন পথ অবরোধের পর পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে রাস্তার ধারে একটি স্পিড মিটার বসানো হবে। তার জন্য যে বিল হবে সেটি গ্ৰাম পঞ্চায়েতকে বহন করতে হবে। আমি মানুষের স্বার্থে রাজি হয়ে গিয়েছি। এছাড়া হোলির পর রাস্তার উপর বাম্পার দেওয়ার কাজ হবে কথা হয়েছে। তার সঙ্গে ব্যারিকেড বসানো হবে। সকাল ন’টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত এই রাস্তা দিয়ে কোনও ভারী গাড়ি যাতায়াত করবে না বলে পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে।” তবে এই রাস্তা দিয়ে ভারি গাড়ি চলাচল বন্ধ করার ব্যাপারে পুলিশের নজরদারির ঘাটতি রয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন ” পুলিশকে এই ব্যাপারে আরও তৎপর হতে হবে।”