এই সময়: কিছুদিন আগেই বাংলা ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি ছিনিয়ে এনেছে। অথচ সেই বাংলারই কোনও সাহিত্যিক এ বছর সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেলেন না। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে সাহিত্য–মহলে।
ঠিক কী কারণে বাঙালি লেখকরা এবার ব্রাত্য থেকে গেলেন সে বিষয়ে কোনও সঠিক জবাব কেন্দ্রের তরফে পাওয়া সম্ভব হয়নি। শুধু সংবাদমাধ্যমে সাহিত্য অকাদেমির সভাপতি মাধব কৌশিক জানিয়েছেন, ‘কিছু টেকনিক্যাল কারণে এ বার এই পুরস্কার দেওয়া সম্ভব হয়নি।’
কিন্তু টেকনিক্যাল কারণ বলতে কী বোঝানো হচ্ছে, সেই ব্যাখ্যা অবশ্য মাধব কৌশিক আর দেননি। সাহিত্য অকাদেমির তরফেও এ বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। সাহিত্য অকাদেমির তরফে যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এ বার মোট ২৩টি ভাষার সাহিত্যিকদের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাংলা অকাদেমির কর্তারাও কেউ মুখ খোলেননি। কোনও ব্যাখ্যাও জানা সম্ভব হয়নি রাজ্যেরও। সাহিত্য অকাদেমিতে বাংলার যে কমিটি রয়েছে, সেখানে আহ্বায়কপদে রয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত দু’দিন ধরে দিল্লিতে সাহিত্য অকাদেমির উৎসব চলছে। সেখানে গত বছরের সাহিত্যসৃষ্টির নিরিখে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। অনেকে মনে করেছিলেন, হয়তো শেষ মুহূর্তে কোনও পরিবর্তন হলেও হতে পারে। কিন্তু সেটাও শেষ পর্যন্ত না হওয়ায় অনেকেই হতবাক।
এর তাৎপর্য আরও বেড়েছে কারণ কিছুদিন আগেই ধ্রুপদী ভাষার তকমা ছিনিয়ে এনেছে বাংলা। তামিলনাড়ু যখন কেন্দ্রের হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে কার্যত ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে, সেখানে বাংলা সাহিত্য এবং সাহিত্যিককে বাদ রেখেই দিল্লির এই অকাদেমি পুরস্কার সেই ‘যুদ্ধ’–এ নতুন কোনও মাত্রা যোগ করে কি না, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল।
এই ইস্যুতেও কি আরও একবার তবে শোনা যাবে কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রশ্নটি? উত্তর খুঁজছেন বিশেষজ্ঞরা।