প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণে পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ৭৮৮৮ কোটি টাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’ বা ‘কমপিটেন্ট অথরিটি’-র টেবিলে রয়েছে বলে জানাল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। পশ্চিমবঙ্গের জন্য চলতি অর্থ বছরে এই টাকা মঞ্জুর না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণে কম খরচ হয়েছে বলেও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে জানিয়েছে। ওই কমিটির সুপারিশ, বঙ্গের একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া টাকা অবিলম্বে দিয়ে দেওয়া হোক।
সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, এর অর্থ হল, পশ্চিমবঙ্গের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণের বকেয়া টাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত এখন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের টেবিলে পড়ে রয়েছে। মন্ত্রীকেই কোনও মন্ত্রকের ‘কমপিটেন্ট অথরিটি’ বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের আমলাদের সঙ্গে রাজ্যের আমলাদের দর কষাকষি চলছিল। অনিয়মের অভিযোগগুলির ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা হয়েছে, সেই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল রাজ্যের কাছে। রাজ্যের মুখ্যসচিব ও অন্য আমলারা দিল্লিতে এসে একাধিক বার বৈঠক করেন। মন্ত্রক যখন বলছে যে, সিদ্ধান্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পড়ে রয়েছে, তখন তার অর্থ, সচিব বা আমলাদের স্তর থেকে এই ফাইল মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের ব্যয়বরাদ্দ নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আজ সংসদে রিপোর্ট পেশ করেছে। কংগ্রেস সাংসদ সপ্তগিরি উলাকার নেতৃত্বাধীন কমিটি সেই রিপোর্টে বলেছে, জোর দিয়ে সুপারিশ করা হচ্ছে, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া অর্থ অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়া হোক। মন্ত্রকের তথ্য থেকে স্পষ্ট, ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫-এ পশ্চিমবঙ্গ একশো দিনের প্রকল্পে কোনও টাকা পায়নি। লাগাতার এই ভাবে টাকা আটকে রাখার ফলে বিপাকে পড়ে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। গ্রামীণ উন্নয়নের কাজে বাধা পড়েছে। গ্রামের মানুষের জীবন-জীবিকায় এর প্রভাব পড়েছে। মানুষের জীবন কঠিন হয়েছে। প্রকল্পের সুবিধা যাতে যোগ্য মানুষের হাতে পৌঁছয়, সে জন্য অবিলম্বে টাকা ছাড়া জরুরি।
একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ থেকে বঙ্গকে টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। রাজ্যের দাবি, একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা, গ্রামীণ সড়ক যোজনায় প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা বাকি। বিষয়টি নিয়ে সংসদের চলতি বাজেট অধিবেশনে প্রায় রোজই তৃণমূল সাংসদেরা সরব হচ্ছেন। শিবরাজকে চিঠি লিখে সাক্ষাৎ চেয়ে এখনও দেখা করতে পারেননি রাজ্যের গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।