অর্ণব দাস, বারাকপুর: শেষমেশ ইস্তাফাই দিলেন পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় রায়। বুধবার দিনভর নাটকের পর সন্ধ্যায় পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার ও হেলথ অফিসারের মাধ্যমে মহকুমা শাসকের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠালেন তিনি। মহকুমা শাসক সৌরভ বারিক ইস্তফা গ্রহণ করেছেন বলেই ফোনে জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপর মহকুমা শাসকের নির্দেশে পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার ভাইস চেয়ারম্যানকে দিয়ে বোর্ড অফ কাউন্সিল মিটিং ডাকাবেন। সেই বৈঠকে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ পত্র গ্রহণের রেজুলেশন করে মহকুমা শাসকের কাছে ফের পাঠাতে হবে।
এরপরই জরুরি ভিত্তিতে এক্সিকিউটিভ অফিসার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডেকে সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে চেয়ারম্যান ঠিক হবে। যেহেতু পানিহাটি পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৩টি তৃণমূলের, তাই দলীয় নির্দেশ মেনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান হিসেবে চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (পূর্ত) সোমনাথ দের নাম উঠে আসছে বলেই সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই তাঁর পুলিশি নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। যদিও তৃণমূলের তরফে নতুন চেয়ারম্যান কে হবেন, তা এখনও ঘোষণা হয়নি।
তবে, ইস্তফা দেওয়ার দিন দিনভর যথেষ্ট জলঘোলা করেন মলয় রায়। নাগরিক পরিষেবা নিয়ে একাধিক অভিযোগের পাশাপাশি সোদপুরের ফুসফুস অমরাবতী মাঠে আবাসন তৈরির চক্রান্তের অভিযোগ সামনে আসতেই হস্তক্ষেপ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মলয় রায়কে পদত্যাগ করার কথা জানিয়েছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে পদত্যাগ করেছেন বলেই জানিয়েছিলেন তিনি।
যদিও বুধবার সকালে মলয় রায় বলেন, “কাউন্সিলর ও দলীয় কর্মীরা আমাকে ভালোবাসে। ওরাই মানতে চাইছে না চেয়ারম্যান পরিবর্তন হোক। অমরাবতী মাঠ নিয়ে যারা বলেছেন, তাদের চিহ্নিত করা হোক। এনিয়ে আমারও কিছু প্রশ্ন আছে, সেগুলি পরিষ্কার হোক। আমি জানতে চাই যে বা কারা চক্রান্ত করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার নামে দোষারোপ করেছে।” দুপুরের পর পুরসভায় চেয়ারম্যানের ঘরে গিয়ে দায়িত্বও সামলাতে দেখা যায় তাকে। ফলে ধন্দ আরও বাড়ে। যদিও শেষেমেষ সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান পদ থেকে মলয় রায় পদত্যাগ করায় জল্পনার অবসান হয়।