• সাইবার অপরাধে প্রতারিতদের টাকা ফেরাতে পদক্ষেপ হাইকোর্টের
    এই সময় | ১৩ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়: সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা কাটাতে পদক্ষেপ করলো কলকাতা হাইকোর্ট। ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে অভিযোগ দায়ের হয়ে থাকলে, নতুন করে আর থানায় অভিযোগ করার জন্য ক্ষতিগ্রস্থদের উৎসাহ না দেওয়ার জন্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিষ্ট্রেটদের সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি জারি করলো কলকাতা হাইকোর্ট।

    হাইকোর্টের রেজিষ্ট্রার জেনারেল নবনীতা রায়ের জারি করা এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এ রাজ্য থেকে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ ৪৫১ থেকে বেড়ে ৩৭ হাজার ৮৮৫ হয়। আর সেইসব অভিযোগের তদন্ত করে এখনও পর্যন্ত ৬৬ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থাগুলি।

    ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশ, এমন অভিযোগ নিয়ে কেউ মামলা করতে এলে, মামলা বা থানায় অভিযোগে উৎসাহ না দিয়ে তাঁদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হোক। আর সেই আবেদনের ভিত্তিতে আদালতে আগে এলে আগে ফেরতের শর্ত মেনে টাকা ফেরাতে পদক্ষেপ করতে হবে ম্যাজিষ্ট্রেটদের। হাইকোর্টের এই বিজ্ঞপ্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞ থেকে ভুক্তোভোগীরা। তবে এই বিজ্ঞপ্তি কার্যকরের ক্ষেত্রে কিছু বাস্তব সমস্যারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁরা।

    প্রথমত, এই বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে এক জেলাশাসক পদমর্যাদার অফিসারের বক্তব্য, প্রশাসনিক দিক থেকে না হয়ে, এমন নির্দেশ জুডিশিয়াল দিক থেকে হাইকোর্ট দিলে, তা কার্যকর করা অনেক বেশি সুবিধা। কারণ এই ক্ষেত্রে পুলিশেরও একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। ওই অফিসারের প্রশ্ন, বাজেয়াপ্ত করা এমন টাকা ফেরানোর ক্ষেত্রে মহকুমা শাসকের এক্তিয়ার আছে, ফলে তাঁকে এ ব্যাপারে যুক্ত করলে, নির্দেশ কার্যকরের ক্ষেত্রে সুবিধা হতো।

    যদিও আইনজীবীদের বক্তব্য, সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল পোর্টালে অভিযোগ নথিভুক্ত করলেই, সেখান থেকে অভিযোগকারীর ঠিকানার সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ ফরোয়ার্ড করা হয়। ফলে নতুন করে অভিযোগ দায়ের করার কোনও প্রয়োজন নেই। আর প্রতারিতরা তাঁদের টাকা পেয়ে গেলে, মামলা চালাতে উৎসাহ পাবেন না। তাই তাঁদের আগে টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে সুযোগ দিচ্ছে দেশের নতুন আইন।

    সাইবার অপরাধের বিশেষজ্ঞ আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহা বলেন, এই বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুলিশের তদন্ত ও কোর্টের মামলার চাপ কমানোর ক্ষেত্রে উপকার হবে। তবে এই সময়কালে সাইবার অপরাধের মাধ্যমে রাজ্যের যত শত কোটি টাকা খোয়া গিয়েছে, যেহেতু আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে করা হচ্ছে, সেখানে এই ৬৬ কোটি টাকা বাস্তবে কতজন প্রতারিত পাবেন, সেটাই বড় কথা।

    আবার যত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বেআইনি হিসেবে চিহ্নিত করে ওই টাকা উদ্ধার হয়েছে, তার মধ্যে বাস্তবে মালিকের অজ্ঞাতে ব্যবহৃত ব্যবহার হয়েছে কি না, তা নিয়েও স্পষ্ট ধারণা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া উচিৎ ছিল বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

  • Link to this news (এই সময়)