এই সময়, বাঁকুড়া: এ বার আর বাজার থেকে নয়। নিজেদের হাতে তৈরি ভেষজ আবিরে দোল উৎসবে মাতবে ওরা।
ওরা, মানে রৌনক, অঙ্কন, অনুষ্কা, পিউ, প্রিয়াঙ্কা। ওরা বাঁকুড়া ২ ব্লকের বাঁকী সেন্দড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করে কী ভাবে ভেষজ আবির তৈরি করতে হয়, তার প্রশিক্ষণ পেয়েছে তারা।
শতবর্ষ পার করে ফেলেছে এই স্কুল। স্থানীয় পাঁচটি গ্রামের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়াশোনা করে। এই মুহূর্তে প্রি-প্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে মোট ২১২ জন পড়ুয়া। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ছোট বাচ্চাদের প্রকৃতির প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে সারা বছর ধরে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়ে থাকে।
গত বছর থেকে সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে প্রাকৃতিক উপকরণ থেকে ভেষজ আবির তৈরির কৌশল। চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের তার পাঠ দেওয়া হয়েছে। টিফিনের পরে তিন দিন ধরে হাতেকলমে সেই শিক্ষা দিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘আমাদের এই এলাকা মূলত কৃষিপ্রধান। তাই জৈব জিনিসের প্রতি পড়ুয়াদের যাতে আগ্রহ তৈরি হয়, সে কারণেই আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে অনেকের বাড়িতেই নিয়মিত ভাবে টোম্যাটো, পালং শাক সমেত বিভিন্ন ধরনের আনাজের চাষ হয়ে থাকে। খাদ্যদ্রব্য হিসেবে এই আনাজগুলির ব্যবহার ছাড়াও তাকে আর কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, সে সম্পর্কেও পড়ুয়াদের মধ্যে একটা স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করে দেওয়া দরকার। এই ধরনের আবির তৈরি করতে খরচও অনেক কম পড়ে।’
প্রধান শিক্ষক আরও জানিয়েছেন, বাজারে সচরাচর যে ধরনের আবির বিক্রি হয়, তার মধ্যে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ মিশে থাকে। তা ব্যবহার করলে ক্ষতি হতে পারে ত্বকেরও। তাই এই বিকল্প ভাবনা।
ছোট ছোট হাতে তৈরি হওয়া ভেষজ আবিরের রঙে এখন থেকেই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে রৌনক, পিউ, প্রিয়াঙ্কাদের মুখ। তারা বলছে, ‘নিজেদের হাতে তৈরি আবির মেখে যেমন নিজেরা আনন্দ করব, তেমনই বাকিদেরও রাঙিয়ে দেবো।’ অনুষ্কাদের বসন্তোৎসব শুরু-ই হয়ে গিয়েছে!