• দোলের শহরে দেদার বিকোচ্ছে ‘শিবের জটা’, অলিতে-গলিতে দেখা মিলবে মহাদেবের!
    প্রতিদিন | ১৩ মার্চ ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: মুড়ি মুড়কির মতো বিকোচ্ছে আগুন নেভানোর যন্ত্র। তবে তাতে মুছবে না কিছুই। বরং দোলের দিন লাল-সবুজ-হলুদ আবিরের আগুনে রং বেরোবে এক চাপে।
    একদিকে রং খেলার ‘ফায়ার এক্সটিংগুইশার’ অন‌্যদিকে শিবের জটা। প্রাক দোলের মহানগরে এই দুইই ‘হিট’ আইটেম।

    ফি বছর দোলে মুখোশ-নকল চুলের ছড়াছড়ি। এবার দোলের বাজারে নতুন ‘আইটেম’ শিবের জটা। বিক্রিবাটা বলে দিচ্ছে, দোলের দিন অলিতে-গলিতে দেখা মিলবে মহাদেবের। কুড়ি টাকায় মহাদেবের জটা কিনতে হুড়োহুড়ি, কাড়াকাড়ি।

    শহর কলকাতায় রঙের পসরা বড়বাজারের বনফিল্ড লেনে। বুধবার শেষবেলায় সরু গলির দু’ধারে রং কিনতে ধাক্কাধাক্কি। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, “দাদা সবুজ আবির এক প‌্যাকেট।” এই ভিড়ে যে দেখা নেই গেরুয়া আবির ক্রেতার। বড়বাজারে শতাব্দীপ্রাচীন রাম প্রসাদ দেবী প্রসাদের রং ব‌্যবসায়ী সমীরণ পালের কথায়, সমস্ত দোকানই গেরুয়া আবির তুলেছিল। দোলের চব্বিশ ঘণ্টা আগের চিত্র বলছে, গোডাউনে পড়ে রয়েছে বস্তা, বস্তা কমলা আবির। শয়ে শয়ে প‌্যাকেট নীল আবির বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। টুকটাক বিকোচ্ছে লাল আবিরও। কিন্তু গেরুয়া?  আবির উৎপাদক সংস্থার কর্ণধার বাবুলাল মেনট জানিয়েছেন, বিক্রি এতটাই কম যে দাম কমাতে হয়েছে গেরুয়া আবিরের। তবে তাতেও লাভ হচ্ছে না।

    ভালো মানের সবুজ আবির ১০ কেজির বস্তা ৮০০ টাকা। বুধবার সন্ধে‌য় দেখা গেল বিক্রি কম হওয়ায় একই মানের গেরুয়া আবিরের দাম ৭০০ টাকা করে দিয়েছেন অনেকে। তবে তাতেও বিক্রি হচ্ছে না। যারা একটু কম টাকায় আবির চায় তাদের জন‌্য রয়েছে সাড়ে চারশো টাকায় ২৫ কেজির বস্তা।

    যদিও ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমদামি রং দিয়ে দোল না খেলাই শ্রেয়। নীলরতন সরকার মেডিক‌্যাল কলেজের ত্বকরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. অরুণ আচার জানিয়েছেন, কমদামি রঙে লেড, কপার, শীসার মতো ক্ষতিকর ধাতু থাকে। মাথায় এই রং লাগলে চুল উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

    রং খেলার পর ঘষে ঘষে রং তোলাও অত‌্যন্ত বিপজ্জনক। ডা. অরুণ আচার জানিয়েছেন, অনেকে রং তুলতে কয়েক ঘণ্টা ধরে ছোবড়া জাতীয় জিনিস দিয়ে মুখ ঘষেন। এতে ত্বকের উপরের স্তর বা এপিডারমিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে ত্বকে প্রদাহ হয়। রং খেলার আগেই ত্বকে নারকেল তেল, অলিভ অয়েল কিংবা ময়েশ্চারাইজার মেখে নিতে বলছেন সাগর দত্ত মেডিক‌্যাল কলেজের ত্বকরোগ বিভাগের চিকিৎসক ডা. অসীম সরকার।
  • Link to this news (প্রতিদিন)