• ‘এ খেলা চলবে’, পদত্যাগ করেও হুঙ্কার পানিহাটির চেয়ারম্যান মলয়ের
    এই সময় | ১৩ মার্চ ২০২৫
  • ‘এ খেলা চলবে। পদত্যাগপত্র গ্রহণ হলো কি না এটা একটা খেলার অংশ। এই খেলা অনেক বড়।’ বৃহস্পতিবার ফের একাধিক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন পানিহাটি পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান মলয় রায়। দীর্ঘ টালবাহানার পর  বুধবার সন্ধ্যায় ব্যরাকপুরের মহকুমাশাসকের কাছেপদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তাঁকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে ইস্তফাপত্র গ্রহণ এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। 

    কিন্তু, এখনও ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে একাধিক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেই চলেছেন মলয়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। আমিই তো বড় খেলোয়াড়। সবাইকে ট্রেনিং দেওয়া আছ। সব টিমকে বলা আছে। ঠিকমতো খেলতে পারি কি না দেখা যাক। ৩৫ জনকেই ট্রেনিং দেওয়া আছে। খোলা মাঠে খেলা হবে। আর কেউ না থাকলে একা থাকব। এখন পর্যন্ত আমি একা আছি।’

     যদিও প্রশাসন সূত্রে খবর, তিনি যে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন তা ত্রুটিপূর্ণ। যদিও এই নিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকরা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। মলয় রায় বৃহস্পতিবার ফের বলেন, ‘আমাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। তাই আমি পদত্যাগ করেছি। কোনও কারণ নেই। এর পর পদত্যাগের পরবর্তী প্রক্রিয়া চলবে। সেই প্রক্রিয়ায় যে সিদ্ধান্ত হবে তাই চূড়ান্ত। খেলা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই খেলা চলছে। আমার পদত্যাগপত্র জমা দেওয়াটাও একটা খেলা হলো।’

    উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই মলয়ের ইস্তফা নিয়ে বিস্তর নাটক চলছে। প্রথমে গত শনিবার এবং পরে মঙ্গলবার সকালে ফোনে মলয়কে ইস্তফা দিতে বলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এর পরেও ইস্তফা নিয়ে নানা টালবাহানা করতে থাকেন তিনি। এর পর মঙ্গলবার রাতে তিনি ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে যান। সেখান থেকে বেরিয়ে মলয় জানান, তিনি পুরমন্ত্রীকে ইস্তফাপত্র দিয়েছেন। যদিও নিয়ম অনুযায়ী তা স্থানীয় ব্যারাকপুরের এসডিও বা মহকুমাশাসক সৌরভ বারিকের কাছেই জমা দেওয়ার কথা। বুধবার সন্ধ্যায় সেই পদত্যাগপত্র এসডিও–র কাছে পাঠান মলয়। কেন সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলো? তা নিয়েও উঠছিল প্রশ্ন। 

    পুরসভার আইন অনুযায়ী, চেয়ারম্যানের পদত্যাগ বোর্ড অফ কাউন্সিলারের কাছে পেশ করা হবে এবং তার পরেই তা গৃহীত হবে। 

    গত কয়েকদিন ধরেই পানিহাটি নিয়ে জোর চর্চা চলছিল। নাগরিক পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মলয়কে। এরই মধ্যে শহরের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত  অমরাবতী মাঠ বিক্রির গুঞ্জন ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। অমরাবতী মাঠের পিছনের জলাজমি থেকে জল তুলে নেওয়া হতে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসীরা। বিষয়টি কান যায় মুখ্যমন্ত্রীরও। একদিকে নাগরিক পরিষেবা নিয়ে চেয়ারম্যানের ভূমিকা, অন্যদিকে অমরাবতী মাঠে নির্মাণের চেষ্টা — ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী।



    এরই মধ্যে মলয়কে ইস্তফা দিতে বলা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়।  যদিও ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘মাঠ বা অন্য কোনও কারণে পদত্যাগের নির্দেশ নয়। দল হয়তো পানিহাটি পুরসভাকে অন্যভাবে চালাতে চাইছে।’

  • Link to this news (এই সময়)