• যানজট কমাতে টার্মিনাসের সামনে থেকে বেসরকারি বাসস্ট্যান্ড সরছে
    এই সময় | ১৪ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়: শিলিগুড়ি শহরকে যানজট মুক্ত করতে তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসের সামনে থেকে বেসরকারি বাস স্ট্যান্ড সরাতে চাইছে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে শিলিগুড়ি সহ রাজ্যের সর্বত্র টোটোর দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে পরিবহণ দপ্তর। এজন্য সব টোটোকে নথিভুক্ত করা এবং টোটোর গায়ে কিউআর কোড লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    শিলিগুড়ির যানজট সমস্যার সমাধান করতে ইতিমধ্যে রাইটসকে সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসের সামনে শয়ে শয়ে বেসরকারি বাস দাঁড়িয়ে থাকার কারণে এই ডিপো থেকে সরকারি বাস বেরোতে পারেন না বলে পরিবহণ দপ্তরের বক্তব্য। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বলেন, ‘তে‍নজিং নোরগে বাস টার্মিনাসের সামনে প্রায় সাড়ে তিনশো বেসরকারি বাস থাকে। যানজট কমাতে এই বেসরকারি বাস স্ট্যান্ড সরানো জরুরি। আমরা কিছু জায়গা চিহ্নিত করেছি। পরিবহণ নগরের ট্রাক টার্মিনাল রয়েছে, ওখানে বাস স্ট্যান্ড গেলে ট্রাক টার্মিনালকে আমরা ঘোষপুকুরে সরিয়ে দেব। এছাড়া হিমূলেও টার্মিনাস করতে পারি।’

    হিমূলে রাজ্য সরকারে প্রায় সাত একর জমি রয়েছে। তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস থেকে সেখানকার দূরত্বও খুব বেশি নয়। ওখানে বেসরকারি বাস স্ট্যান্ড সরে গেলে যাত্রী অথবা পরিবহণ শ্রমিকদের সমস্যা হবে না বলে স্নেহাশিস মনে করছেন। বিজেপিও এতে আপত্তি করছে না। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, ‘বেসরকারি বাস স্ট্যান্ড স্থানান্তর করার আগে সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সহমত তৈরি করা প্রয়োজন।’

    তেনজিং নোরগে টার্মিনাসের সামনে বেসরকারি বাসের জন্য যানজট তৈরি হওয়ার পাশাপাশি শিলিগুড়ির অন্যতম সমস্যা টোটো, ই–রিকশা’র দৌরাত্ম্য। শিলিগুড়িতে চার হাজার ই–রিকশ এবং সাত হাজার টোটো রয়েছে। হাওড়া, বারাসত, চুঁচুড়া, আসানসোল, বর্ধমান, কল্যাণী–র মতো শহরের পাশাপাশি শিলিগুড়িতেও এই সমস্যা রয়েছে। ই–রিকশা নিয়ে যে আইন রয়েছে সেখানে নির্দিষ্ট রুটে পারমিট দেওয়ার বন্দোবস্ত নেই বলে পরিবহণ ভবনের বক্তব্য। স্নেহাশিসের কথায়, ‘টোটো যে কোনও জায়গায় চালানো যেতে পারে এই ভাবনা থেকে অনেকে টোটো কিনছেন। সবাই একই জায়গায় ভিড় করছেন। স্টেশন, বাজার এলাকায় প্রবল যানজট হচ্ছে। তাই এদের কিউআর কোডের স্টিকার দেওয়া হবে এবং নথিভুক্ত করা হবে। প্রতিটি পুরসভায় কী ভাবে টোটো চলাচল করলে যানজট হবে–না এই নিয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করা হবে।’

    প্রতিটি পুরসভা ভিত্তিক এই নির্দেশিকা তৈরি করার জন্য পৃথক বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে স্থানীয় থানা, পুরসভার প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, টোটো ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা থাকবেন। এ ভাবে বৈঠক করে নির্দেশিকা তৈরি করতে না পারলে টোটোর দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না বলে পরিবহণ দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য। বেআইনি টোটো কারখানা বন্ধ করতে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হলেও যে টোটো ইতিমধ্যে রাস্তায় নেমে গিয়েছে তা বন্ধ করতে চায় না নবান্ন। স্নেহাশিসের কথায়, ‘লক্ষ লক্ষ যুবক টোটো চালাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ টোটোতে চড়ছেন। এত মানুষের জীবন জীবিকা যেহেতু যুক্ত রয়েছে তাই কোনও মানুষকে আমরা জীবিকাচ্যুত করতে চাই না।’

  • Link to this news (এই সময়)