চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
এক রাতের মধ্যেই ‘ভূত’–এর সংখ্যা বেড়ে গেল আট গুণ। মঙ্গলবার রাতে কোচবিহারে জেলা তৃণমূলের প্রাথমিক হিসেবে ভুয়ো ভোটারের সংখ্যা ছিল ৫০০। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে সেই ভুয়ো ভোটারের সংখ্যা ৪ হাজার ৭২ জন বলে জানানো হলো। আশ্চর্যজনক ভাবে তার মধ্যে মাথাভাঙ্গা বিধানসভা এলাকাতেই ভুয়ো ভোটারের সংখ্যা ৪ হাজার ২৪ জন। অর্থাৎ জেলার বাকি আটটি বিধানসভায় ভুয়ো ভোটারের সংখ্যা মাত্র ৪৮। হলদিবাড়ি শহর, হলদিবাড়ি ব্লক, মেখলিগঞ্জ ব্লক, সিতাই ব্লক এবং তৃণমূলের দিনহাটা ১–এর বি সাংগঠনিক ব্লকে কোনও ভুয়ো ভোটার পায়নি শাসক দলের স্ক্রুটিনি টিম। এই পরিস্থিতিতে ফের ১৭ থেকে ১৯ মার্চ তিন দিন বুথে বুথে ভুয়ো ভোটার খুঁজতে অভিযানে নামতে চলেছে তৃণমূল।
দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক( হিপ্পি) বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘সব ব্লক সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। তাঁরা যে রিপোর্ট পেশ করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, জেলায় ৪ হাজার ৭২ জন ভুয়ো ভোটারের সন্ধান মিলেছে। যার সিংহভাগ মাথাভাঙ্গা বিধানসভার মাথাভাঙ্গা ২ ব্লক এলাকায়। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ছ’টি দখল করেছিল বিজেপি। তাই মনে হচ্ছে, ওই জয়ের পিছনে এই ভুয়ো ভোটারের বিষয়টি থাকলেও থাকতে পারে।’
একইসঙ্গে তিনি জানান, ১৫ তারিখ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন। সেখানে সমস্ত তথ্য পেশ করা হবে। এরপর ১৬ তারিখ প্রত্যেকটি ব্লকে আরেকটি মিটিং করা হবে। তারপর ১৭ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ তিন দিন ফের বুথে বুথে স্ক্রুটিনি হবে।
এত কর্মী নামিয়ে সাত দিন ধরে স্ক্রুটিনি করার পরও আশানুরূপ ভুয়ো ভোটারের না মেলাতেই কি ফের ময়দানে নামার সিদ্ধান্ত? এই প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, ‘তেমন কোনও বিষয় নেই। ৮০ শতাংশ স্ক্রুটিনি হয়ে গেছে। তবে ফের তা করা হবে।’ যা পরিস্থিতি তাতে ভুয়ো ভোটারের সংখ্যাটা ৭ হাজার হবে বলে মনে করেন তিনি। যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, যে হারে প্রচার করে ঝাঁপিয়ে শাসক দল মাঠে নেমেছিল সে ভাবে ভুয়ো ভোটারের সন্ধান মেলেনি। এ দিকে বিষয়টি শুধু রাজ্যস্তরে সীমাবদ্ধ না থেকে গোটা দেশেই প্রচারের আলো পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভুয়ো ভোটারের সংখ্যা সামান্য হলে তা তৃণমূলের পক্ষে মোটেই স্বস্তিদায়ক হবে না। তাই মুখরক্ষায় ফের ময়দানে নামতে হচ্ছে ঘাস ফুল শিবিরকে।