• সোনাঝুরিতে উঠল রঙে নিষেধাজ্ঞা, প্রশ্ন পরিবেশ নিয়ে
    আনন্দবাজার | ১৪ মার্চ ২০২৫
  • শান্তিনিকেতন: দোল উৎসবের ঠিক আগের বিকেলে, বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হল দোলের দিন রং খেলা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার যাবতীয় ব্যানার ও পোস্টার। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশপ্রেমীরা।

    দিন কয়েক আগেই বসন্ত উৎসবে ভিড় এড়াতে এ বছর সোনাঝুরির হাটে দোল খেলা নিষিদ্ধ করে ব্যানার ও পোস্টার দিয়েছিল বন দফতর। বলা হয়, সেখানে রং খেলা, গাড়ি পার্কিং, ড্রোন ওড়ানো বা ভিডিয়োগ্রাফি নিষিদ্ধ। বনের মধ্যে দোল উৎসব পালন করলে পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কাকে মাথায় রেখে ওই সিদ্ধান্ত বলে বন-কর্তারা জানিয়েছিলেন। তবে সে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিজেপি। তারা অভিযোগ করে, রাজ্য সরকার সোনাঝুরি হাটে দোল উৎসব পালনে বাধা দিচ্ছে।

    যদিও বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার মন্তব্যের পরে এ দিন পরিস্থিতি বদলায়। বনমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমের একাংশকে বলেন, ‘‘আমরা চাই, সবুজ সুরক্ষিত থাকুক। সে জন্য আমাদের তরফে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু শান্তিনিকেতনে রং খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। যাঁর, যেখানে রং খেলার ইচ্ছে, খেলতে পারেন। আমরা প্রকৃতিকে বাঁচানোর অনুরোধ করেছি।’’

    এর পরেই সোনাঝুরির হাটে বন দফতরের লাগানো সব ব্যানার-পোস্টার ‘উধাও’ হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে। বীরভূম বন দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, ব্যানার, পোস্টার কারা সরিয়েছে, তাঁদের জানা নেই। সোনাঝুরিতে রং খেলা যাবে কি না, সে প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বনমন্ত্রী যেমন জানিয়েছেন, তেমন হবে। এর বেশি বলতে পারব না।”

    সোনাঝুরির হাটে তবে কি আজ, শুক্রবার দোল উৎসব পালন করা যাবে? অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) রাণা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘শান্তিনিকেতন-বোলপুরের যে কোনও জায়গায় মানুষ দোল খেলতে পারেন। বনের পশুপাখি, পরিবেশকে বিঘ্নিত না করে, মহিলাদের সম্মান বজায় রেখে, বেআইনি কাজ না করে, মানুষ সর্বক্ষণ দোল খেলতে পারবেন।’’

    শেষ পর্যন্ত সোনাঝুরির হাটে গত বছরের মতোই দোল খেলা হলে পরিবেশ কতখানি সুরক্ষিত থাকবে তা নিয়ে আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘সোনাঝুরির জঙ্গলে এখন প্রতিদিন যে ভাবে ও যে আকারে হাট বসছে, তা পরিবেশ-বিরোধী। একই সঙ্গে হাটে দোল খেলা হলে, তা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে!’’ যদিও হাটের ব্যবসায়ীদের মতে, হাতে সময় নেই। ফলে, দোল উৎসবের আয়োজন এ বার করা কঠিন।

    বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিনও বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসেছেন ২০১১ সালে। হোলি হাজার বছর ধরে খেলা হচ্ছে। আপনি দু’দিন হল পৃথিবীতে এসে ঠিক করে দেবেন, কে, কতক্ষণ হোলি খেলবে!’’ সমাজমাধ্যমে বীরভূম জেলা পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে বসন্ত উৎসব ও হোলি উদ‌যাপনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। তারা বলেছে, ‘সকলকে ভুল তথ্য এড়িয়ে চলার অনুরোধ করছি’।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)