• সামনেই পরীক্ষা, জামিন পেলেন না যাদবপুরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া
    এই সময় | ১৪ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া সৌম্যদীপ মাহান্ত ওরফে উজানের জামিন হলো না বৃহস্পতিবার। তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় এ দিন।

    বুধবার রাতে দর্শন প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ১ মার্চ রাতে ক্যাম্পাসে তৃণমূলের কর্মী সংগঠন ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে আগুন লাগে। এই মামলাতেই গ্রেপ্তার করা হয় সৌম্যদীপকে। ক্যাম্পাসে ‘উজান’ নামেই বেশি পরিচিত তিনি।

    কী ভাবে সে দিন শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির সামনে গোলমাল পাকানো হবে, পুলিশ এলে কী করণীয়, সে সবের পরিকল্পনা হয়েছিল — বৃহস্পতিবার আদালতে একাধিক গ্রুপের স্ক্রিনশট দেখিয়ে সে সবের ‘তথ্যপ্রমাণ’ পেশ করেন সরকারি ও অভিযোগকারীর আইনজীবী। যদিও সৌম্যদীপের আইনজীবী সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি আবেদন করেছিলেন, যে কোনও শর্তে তাঁর মক্কেলকে জামিন দেওয়া হোক। কারণ ২৪ মার্চ তাঁর পরীক্ষা শুরু। দু’পক্ষের মতামত শুনে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ওই ছাত্রকে।

    ক্যাম্পাসে এবং ডিপার্টমেন্টে মৃদুভাষী, নরম স্বভাবের বলেই পরিচিত সৌম্যদীপ। তাঁর গ্রেপ্তারিতে বিভাগীয় শিক্ষক, সহপাঠীরা বিস্মিত। অন্যান্য বিভাগের যে শিক্ষকরা তাঁকে চেনেন, তাঁরাও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে সৌম্যদীপ এমন একটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। বাংলার অধ্যাপক রাজ্যেশ্বর সিনহার কথায়, ‘পড়ুয়ারা আতঙ্কিত। সব তদন্তেই পুলিশকে সাহায্য করছে ওরা। পুলিশের উচিত আরও সংবেদনশীল ভাবে পড়ুয়াদের সঙ্গে ব্যবহার করা।’ যদিও লালবাজারের দাবি, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ধৃত পড়ুয়া জড়িত বলে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।

    এ দিন আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয় সৌম্যদীপকে। সেখানে তাঁর আইনজীবী জানান, ওই পড়ুয়া পড়াশোনায় ভালো। নোটিস পেয়ে বুধবার থানায় হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। সেখানেই জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগকারীর আইনজীবীর দাবি, সে দিন যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে হেনস্থা করা হয়েছে। আগুন লাগানো হয়েছে ‘শিক্ষাবন্ধু’র দপ্তরে।

    তিনি বলেন, ‘যাদবপুরে ভালো পড়ুয়াদের পাশাপাশি এমন অনেকে আছেন, যাঁরা শুধু ঝামেলা সৃষ্টি করেন। তা ছাড়া, ধৃত ছাত্র পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।’

    এর পর বিচারককে ঘটনার সময়ের ছবি ও স্ক্রিনশটগুলি দেখানো হয়। বিচারক তদন্তকারীদের কাছে জানতে চান, ওই পড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করার কারণ কী? উত্তরে জানানো হয়, তাঁকে প্রশ্ন করা হলে প্রথমে তিনি কিছু বলতে চাননি। হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনের বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা দরকার বলেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে সৌম্যদীপকে।

  • Link to this news (এই সময়)