শুক্রবার ‘শহিদ দিবস’ পালনকে কেন্দ্র করে তরজায় জড়াল তৃণমূল এবং বিজেপি। নন্দীগ্রামের ঘটনার সময়ে তৎকালীন বাম সরকার ও বর্তমান সরকারকে এক আসনে রেখে কটাক্ষ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। পাল্টা আক্রমণ তৃণমূল কংগ্রেসের।
এদিন সকালেই নন্দীগ্রামের ঘটনায় শহিদদের স্মৃতির প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘কৃষক দিবসে নন্দীগ্রামে কৃষিজমি রক্ষা আন্দোলনের শহিদদের স্মৃতির প্রতি আমার গভীর সমবেদনা-সহ সকল কৃষক ভাইবোন ও তাঁদের পরিবারকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকার আমাদের কৃষক বন্ধুদের পাশে থাকবে।’
এ দিন সকালে নন্দীগ্রামের অধিকারী পাড়ায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী-সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা উপস্থিত হয়ে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন। পরে সোনাচূড়া শহিদ মিনারে গিয়েও শ্রদ্ধা জানান শুভেন্দু। সোনাচূড়া গ্রামে রাম মন্দির নির্মাণের প্রসঙ্গে এ দিনের মঞ্চ থেকে শুভেন্দু বলেন, ‘রাম নবমীর দিন মন্দির নির্মাণ শুরু হবে। নন্দীগ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে সোনাচূড়াতে মন্দিরের নির্মাণ হবে। এখানে অয্যোধা রাম মন্দিরের আদলে মন্দির তৈরি হবে।’
শাসক দলকে কাঠগড়ায় তুলে শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘তৎকালীন শাসক দল সিপিএম ও এখনকার শাসক দলের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। নতুন বোতল পুরোনো মদ-এর মতো অবস্থা।’ উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসন থেকে জিতে আসেন শুভেন্দু। বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। শুভেন্দু বলেন, ‘আগামী ২ মে আমি বিধায়ক হিসেবে কী কী করেছি, নন্দীগ্রামের জন্য তার হিসেব আপনাদের সামনে তুলে ধরব।’
বিজেপির শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর বেদি জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নতুন করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান পালন করে তৃণমূল। উপস্থিত ছিলেন তমলুক সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান চিত্ত মাইতি, সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সেখ সুফিয়ান, সেখ আবুতাহের-সহ অন্যান্যরা। শুভেন্দুর বক্তব্যের বিরোধিতা করে তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘নন্দীগ্রামের আন্দোলনের সময় কোথায় ছিল বিজেপি? এলাকার মানুষ জানেন, কারা সে দিন নন্দীগ্রামের মানুষের পাশে ছিল।’ আগামী দিনে নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপি মুছে যাবে বলেও দাবি করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির আন্দোলন চলাকালীন ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশি অভিযানে ১৪ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। নিহতদের স্মরণে প্রতি বছরই এই দিনে রাজ্য জুড়ে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালন করে তৃণমূল-সহ বিভিন্ন সংগঠন। তবে ২০২১ সালে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পর নন্দীগ্রাম দিবস পালনের অনুষ্ঠান ভাগ হয়ে যায়।
তথ্য সহায়তা: সোমনাথ মাইতি