• ৯,০০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুর পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক...
    আজকাল | ১৫ মার্চ ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার বর্তমানে ১০ লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণের বোঝায় জর্জরিত এবং এই সংকট মোকাবেলায় একাধিক পথে তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন, প্রশাসনিক খরচ এবং কল্যাণমূলক প্রকল্প চালু রাখতে তহবিল প্রয়োজনীয়। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু ও তাঁর সহযোগীরা রাজ্যের আর্থিক দুরবস্থার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করে, তহবিল সংগ্রহের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

    এই পরিস্থিতিতে, অন্ধ্রপ্রদেশের মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (APMDC) ৯,০০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পরিকল্পনা নিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলেও সমালোচকরা এই বিশাল ঋণ নেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বিরোধী দলগুলো সুদের হার, ঋণ পরিশোধের বোঝা এবং রাজ্যের পুনরাবৃত্তি হওয়া অর্থনৈতিক ভুল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

    ২০১৮ সালে তৎকালীন টিডিপি সরকার ২,০০০ কোটি টাকার অমরাবতী বন্ড ইস্যু করেছিল, যেখানে ১০.৩২% সুদের হার ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে যগন্মোহন রেড্ডি নেতৃত্বাধীন ওয়াইএসআরসিপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর অমরাবতী উন্নয়ন প্রকল্পে মনোযোগ দেওয়া বন্ধ করে দেয় এবং সুদ পরিশোধে ব্যর্থ হয়। ফলে ক্রিসিল এবং আইসিআরএ-এর মতো রেটিং সংস্থাগুলো বন্ডের রেটিং কমিয়ে দেয়, যা রাজ্যের অর্থনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতায় আঘাত হানে। ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত বকেয়া সুদের পরিমাণ বেড়ে ২১১ কোটি টাকায় পৌঁছায়।

    APMDC-এর নতুন বন্ড পরিকল্পনা আরও ঋণের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। যদিও সরকার দাবি করছে যে এই তহবিলটি পরিকাঠামো ও খনন প্রকল্পে ব্যয় হবে, সমালোচকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে অতিরিক্ত ঋণ নেওয়া সরকারি অর্থনীতির উপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

    আর্থিক বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে অমরাবতীর মতো পরিস্থিতি যাতে পুনরায় না ঘটে, সেদিকে নজর দিতে হবে। যদিও সরকার ঋণ নিয়ে সঠিক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে অতীতের বন্ডগুলির বকেয়া পরিশোধ এবং ক্রেডিট রেটিং উন্নত করার চাপ বর্তমান সরকারের উপর রয়ে গেছে।

    চন্দ্রবাবু নাইডুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের হাতে এখন বড় দায়িত্ব—রাজ্যের অর্থনীতি রক্ষা করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর ঋণের বোঝা না চাপিয়ে সুচিন্তিত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া।
  • Link to this news (আজকাল)