দেশ জুড়েই দোল উৎসব। দোলের রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার দিন। শুক্র ও শনি এই দুদিন ধরে রঙ খেলার আনন্দে মেতেছেন সাধারণ মানুষ। কোথাও শুক্রবার রঙ খেলেছেন কেউ কেউ। আবার কোথাও শনিবার রঙ খেলার আনন্দে গা ভাসিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এসবের মধ্য়েই এবার হোলির শুভেচ্ছা জানিয়ে সিপিএম সোশ্য়াল মিডিয়ায় যা পোস্ট করেছে তা নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
এক্স হ্যান্ডেলে সিপিএম একটা ছবি পোস্ট করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে হাফ প্যান্ট পরে এক শিশু দেওয়ালে কাস্তে হাতুড়ি আঁকছে। একটু দূরে দুজন রঙ খেলার আনন্দে মেতেছে। শিশুর মুখেও হাসি। নীচে পড়ে রয়েছে আরও খানিকটা লাল আবীর। ক্যাপশানে লেখা Colour of Resistance। প্রতিরোধের রঙ।
আর এই ছবি পোস্ট হতেই নানা প্রশ্ন উঠছে নেটদুনিয়ায়। কেন শিশুর ছবি ব্যবহার করা হল? অন্য কোনও ছবি কি ব্যবহার করা যেত না? অনেকের মতে, আসলে বিতর্ক তৈরি করার জন্য়ই এই ধরনের ছবি পোস্ট করা হয় সিপিএমের তরফে।
এক নেটনাগরিক লিখেছেন, কোনও রাজনৈতিক দলের ইস্তেহার বা বিজ্ঞাপনে শিশুদের ব্যবহার কি আইনসম্মত? শৈশবটাও হনন করে নেবেন, আপনাদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা চরিতার্থ করতে গিয়ে?
একজন একটি মিম উল্লেখ করে লিখেছেন, এই সব করেই দলটা শূন্য হয়ে গেল। অপর একজন লিখেছেন, সিম্বল অফ অ্যান্টি হিন্দু, অ্যান্টি ন্যাশানালস। অপর একজন একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন রঙিন হব তবে রং বদলাব না।
তবে অনেকের মতে, ইদানিং প্রায় প্রতিটি উৎসবেই নানা ধরনের শুভেচ্ছা বার্তা পোস্ট করছে সিপিএম। আর প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটু করে বিতর্ক উসকে দিচ্ছে তারা। তবে কি সুকৌশলে এটা করা হচ্ছে? তবে কি বাংলার জনমানসে ভেসে থাকার জন্যই এই কৌশল নিয়েছে সিপিএম?
এর আগে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে সিপিএম দেখিয়েছিল কাস্তে হাতুড়ির মাথার উপর রয়েছে সান্তা টুপি। সাদা রঙের সান্তা টুপি কাস্তে হাতুড়ির মাথার উপর। নীচে লেখা বড়দিনের শুভেচ্ছা। দ্যা লেফট ক্রিয়েটিভ।
তারপর পৌষ পার্বণের শুভেচ্ছাও জানিয়েছিল সিপিএম। তার সঙ্গে দেওয়া ছিল একটি ছবি। সেখানে দেখা গিয়েছিল এক মহিলার কোলের কাছে দুটি বাচ্চা বসে রয়েছে। আর এক ব্যক্তি উনুনের কাছে বসে রয়েছেন।সম্ভবত পিঠে বানাচ্ছেন তিনি। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন বাংলার কতজনের বাড়িতে এখনও উনুনে রান্না হয়? প্রত্যন্ত গ্রামে একেবারে প্রান্তিক বাড়িতে অথবা কিছু চায়ের দোকানে এখনও উনুনের রান্নার চল রয়েছে। আর সিপিএমের পোস্টে দেখা গিয়েছিল সেই উনুন। তবে এই উনুন দেখে পুরনো দিনে ফিরলেন অনেকে। পুরো নস্টালজিয়া।
সিপিএমের এই পোস্টকে রিপোস্ট করে কটাক্ষ করেছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি লিখেছিলেন, আরও এক ঐতিহাসিক ভুলের পথ থেকে মরিয়া হয়ে বঙ্গ সমাজে ফেরার চেষ্টা। কমরেড বড় দেরি গিয়েছে। এসব যত করবে তত রসিকতার উপাদান বাড়বে। উৎসবে ফেরার পথে বিভ্রান্তির সর্বশেষ নমুনা।