• মুসলিম মায়ের পেটে জন্ম, তখন তৃণমূল বলে কিছু ছিল না! ক্ষমা চাইলেন না হুমায়ুন কবীর
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৫ মার্চ ২০২৫
  • দলীয় নেতৃত্বের পাঠানো শো কজের জবাব দেওয়ার জন্য নিজেই আগামী সোমবার শো কজের জবাব দিলেন তিনি।

    এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন হুমায়ুন। সেইসব সাক্ষাৎকার বেশ ঝাঁঝালোই ছিল বলা যায়। হুমায়ুন সাফ জানিয়ে দেন, যে নির্দিষ্ট বক্তব্যের জন্য তাঁর কাছে দলের তরফে চিঠি দিয়ে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছিল, এখনও তিনি তাঁর সেই বক্তব্য ও অবস্থানে অনড়ই থাকবেন। কারণ, তাঁর মনে হয় না, তিনি এমন কোনও মন্তব্য করেছেন, যার দ্বারা বিধানসভার, বিধানসভার অধ্যক্ষের কিংবা দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ করা হয়েছে।

    প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন ধরেই হুমায়ুন কবির ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে বাকযুদ্ধ চলছে। রাজনীতির কারবারি ও বিশ্লেষকরা বলছেন, সেই বাকযুদ্ধ এমন একটা পর্যায়ে চলে গিয়েছে, যা কখনও কোনও গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশে কাম্য হতে পারে না। যদিও শুভেন্দু বা হুমায়ুন - কেউই এসবে পাত্তা দিতে নারাজ। তাঁরা রয়েছেন তাঁদের মতোই।

    একটি মুসলিম বিধায়কদের উদ্দেশ করে শুভেন্দুর এক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পালটা কিছু মন্তব্য করেছিলেন হুমায়ুন। বিধানসভার ঠিক বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এবং তাঁদের প্রশ্নের উত্তরে ১০ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের বক্তব্য দিয়েছিলে তিনি। যার মধ্যে নির্দিষ্টভাবে ৩১ সেকেন্ডের একটি অংশ তুলে ধরে দলীয় নেতৃত্ব তাঁকে শো কজ করে। একথা সংবাদমাধ্যমকে হুমায়ুন নিজেই জানিয়েছেন।

    তিনি আরও বলেছেন, তিনি ওই দিন কী বলেছেন, কেন বলেছেন - তার ব্যাখ্যা শো কজের জবাবে দিয়েছেন। এক পৃষ্ঠার শো কজ ছিল। তিনি জবাব লিখেছেন দু'পৃষ্ঠায়। দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির দায়িত্বে থাকা শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়কে হোয়াট্সঅ্য়াপে সেই চিঠির পিডিএফ ফাইল পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু, সেই জবাবি চিঠির কোথাওই নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাননি হুমায়ুন।

    তাঁর বক্তব্য, তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তখন তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্বই ছিল না। তিনি একটি মুসলিম হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মুসলিম মায়ের পেটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আজও তিনি সবার আগে সেই মুসলিম প্রতিনিধি এবং তারপর কোনও দলের - কোনও নেত্রীর অনুগত সৈনিক! এখন কেউ যদি তাঁর গোষ্ঠীকে অসম্মান করেন, তাহলে তিনিও তাঁর জবাব দেবেন। চুপ করে বসে থাকবেন না!

    প্রশ্ন উঠছে, তাহলে হুমায়ুন কি এবার তৃণমূল ছেড়ে দেবেন? একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হুমায়ুন এই প্রসঙ্গে বলেন, তিনি অবশ্যই তৃণমূল কংগ্রেসেই থাকতে চান। কিন্তু, দল যদি তাঁকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে, তখন দেখা যাবে কী করা যায়! অর্থাৎ - এই ইস্যুতে দলের কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছেন হুমায়ুন।

    সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ মনে করছে, হুমায়ুনের এই 'বিদ্রোহী' আচরণ দলের কাছে মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। অন্যদিকে, শোভনদেব জানিয়েছেন, হুমায়ুনের জবাব চিঠি প্রিন্ট করিয়ে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারপর যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেওয়া হবে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)