চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
চলতি ২০২৪-২৫ আর্থিক বর্ষে কোচবিহার জেলার ২৮ হাজার ২৯৮টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ১ হাজার ৩৭৬ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ পেয়েছে কোচবিহার। একই সঙ্গে চলতি আর্থিক বর্ষে নতুন স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে রাজ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে কোচবিহার জেলা। সীমান্তবর্তী প্রান্তিক এই জেলার মহিলাদের স্বনির্ভর করতে এই টাকা যেমন কাজে লাগছে। পাশাপাশি তাদের নানারকম প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপযোগী করে তুলছে জেলা গ্রাম উন্নয়ন সেল।
সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এখন বদলেছে স্বনির্ভর দলের কাজকর্ম। একটা সময় বিভিন্ন হস্তশিল্পর কাজ করা এবং মেলাতে অংশ নিয়ে সারা বছর চলত এই গোষ্ঠীগুলো। তাই ঋণের পরিমাণও সেই সময় কম ছিল। এখন বিভিন্ন রকম কৃষিজাত কাজকর্মের দিকে গোষ্ঠীগুলো তাদের ঋণ নেওয়া অর্থ পুঁজি হিসাবে কাজে লাগাচ্ছে। কোচবিহার জেলায় এই মুহূর্তে স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার। তার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৬ লক্ষ মহিলা। কোচবিহারে পাটি শিল্প, বেতের কাজ, হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরিতে আগে থেকেই যুক্ত ছিল একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী।
এই কাজের পাশাপাশি এখন আলু চাষ, সবজি চাষ,পশু পালন, মুরগির ফার্মের মতো কাজের সঙ্গেও মহিলারা বেশি করে যুক্ত হচ্ছেন। গোষ্ঠীর ঋণের টাকা এখানে কাজে লাগানো হচ্ছে। অনেকে আবার ছোট, ছোট শিল্প ইউনিট তৈরিতেও ঋণের টাকা ব্যবহার করছেন। তার মধ্যে বিভিন্ন রকম হোসিয়ারি সামগ্রী তৈরি, স্কুলের পোশাক তৈরি, মেয়েদের সাজ সরঞ্জামের জিনিস তৈরি করছেন মহিলারা। মুদিখানার দোকান, হোটেল, ফাস্টফুড দোকানেও ঢুকে গিয়েছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। জেলা গ্রাম উন্নয়ন সেলের আধিকারিক মহেশ বর্মন বলেন, ‘মহিলারা যাতে ঋণের টাকা সঠিক ভাবে এবং সঠিক জায়গায় কাজে লাগাতে পারে তার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে প্যাকেজিং, মার্কেটিং–সহ নানা দিকে সাহায্য করা হচ্ছে।’
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলা চলতি আর্থিক বর্ষে নতুন করে ১ হাজার ৫৫৫টি গোষ্ঠী তৈরি করেছে। যা লক্ষ্যমাত্রা পূরণে রাজ্যের মধ্যে এক নম্বর স্থানে আছে। ঋণ প্রদানেও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর মধ্যে কোচবিহার প্রথম স্থান রয়েছে। তারপরেই রয়েছে মালদা জেলা।