• সাপে কামড়ালে চিকিৎসার জন্য সাপটিকে নিয়ে আসা সত্যিই কি প্রয়োজন? যা বলছেন চিকিৎসকরা
    এই সময় | ১৬ মার্চ ২০২৫
  • রিলস দেখে শিখেছিলেন সাপ ধরার কৌশল। সাপের কামড় খাওয়ার পর সেই কৌশল কাজে লাগিয়েই সাপ ধরে হাসপাতালে হাজির হলেন বাপ্পা দলুই। বীরভূমের সদাইপুর থানার অন্তর্গত পানুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাপ্পা চিকিৎসার জন্য যান সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে । এর পর কৌটো থেকে বার করে সাপটি দেখাতেই কার্যত ভিরমি খেয়ে যান চিকিৎসক । তার সঙ্গীকে বলেন, সাপটিকে ফেরত নিয়ে যেতে । অন্যদিকে, বাপ্পাকে ভর্তি নেওয়া হয় হাসপাতালে। শুরু হয় চিকিৎসা।

    তবে সাপে কামড়ালে চিকিৎসার স্বার্থে সাপ ধরে নিয়ে আসা সত্যিই কি খুব প্রয়োজন ? এই বিষয়ে কি বলছেন চিকিৎসক বা সর্প বিশেষজ্ঞরা?

    চিকিৎসক অনমিত্র বারিক ও রিজওয়ান অসীম জানান, ‘এখন মানুষ আগের থেকে অনেক সজাগ হয়েছে । এ ধরনের ঘটনা আগে প্রচুর দেখা গেলেও, বর্তমানে তা অনেকটাই কমেছে তবে আরও সচেতনতা দরকার। বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলগুলিতে। সাপে কামড়ালে তার চিকিৎসা কোন সাপ কামড়েছে সেই ভিত্তিতে হয় না, হয় উপসর্গের ভিত্তিতে। যে কোনও সাপ কামড়ালেই ওষুধ একমাত্র AVS । তাই কোন সাপ কামড়েছে তাকে চিহ্নিত করার বা তাকে ধরে নিয়ে আসাটা সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কিছু নয়।’

    একইসঙ্গে চিকিৎসকদের মতে, ‘সাপ ধরার চেষ্টা করতে গিয়ে এতে হিতে বিপরীতও হতে পারে। যেমন এর জন্য সাপ আবার কামড় দিতে পারে অথবা সাপ ধরতে গিয়ে দেরি হওয়ায় হাসপাতাল না পৌঁছাতে পারলে রোগীর মৃত্যুও পর্যন্ত হতে পারে । সাপ ধরার বা তাকে চিহ্নিত করার কোন প্রয়োজন নেই। সাপে কামড়ানোর পর সবার আগে দরকার রোগীকে মানসিক ভাবে আশ্বস্ত করে এবং তাঁকে হাঁটাচলা না করতে দিয়ে দ্রুত পৌঁছাতে হবে নিকটবর্তী সরকারি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল বা জেলা হাসপাতালে । সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হবে রোগীর।’ এমনকি সাপে কামড়ালে পায়ে বাঁধন দেওয়ারও প্রয়োজন নেই বলে বলছেন চিকিৎসকরা।

    অন্যদিকে, ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল বিউরো এর সদস্য এবং সর্ব বিশেষজ্ঞ দীনবন্ধু বিশ্বাস জানান, ‘এখনও মানুষের মধ্যে অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে । যেটা একদিনে মুছে ফেলা সম্ভব নয় তাই নিয়মিত প্রচার চালাতে হবে। সাপে কামড়ালে ওঝা গুণিনের খপ্পরে না পড়ে শুধুমাত্র হাসপাতাল যাওয়া ছাড়া রোগীর আরও কিছু করণীয় নেই। সাপ ধরতে বা মারতে গেলে সময় তো অপচয় হয় যা রোগীর প্রাণ সংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় । এছাড়াও এটা অপরাধও । সে জন্য শাস্তিও পেতে পারেন তিনি।’

  • Link to this news (এই সময়)