দিগন্ত মান্না, পাঁশকুড়া
ফুলচাষকে কেন্দ্র করে পাঁশকুড়ার দোকান্ডা পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে আগেই। এ বার পর্যটক পরিবহণেও বিপুল আয়ের মুখ দেখল দোকান্ডা। এই বাহান্ন দিনের ফুলের মেলায় পর্যটক বহন করে দোকান্ডার এক একজন মারুতি ভ্যানচালক গড়ে দেড় লক্ষ টাকা আয় করেছেন।
পাঁশকুড়ার ঘোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দোকান্ডায় কংসাবতী নদীর চরে পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে এলাকার চাষিরা ফুলচাষ করছেন। সমাজমাধ্যমের দৌলতে বছর সাতেক আগে দোকান্ডার ফুল বাগিচার কথা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকে ভিড় বাড়ে পর্যটকের।
পর্যটকদের ফুল বিক্রি করার লক্ষ্যে দোকান্ডায় একটি ফুলের মেলা বসে। এ বার বন্যার কারণে দোকান্ডার ফুলচাষ ক্ষতির মুখে পড়ে। এ বার ফুল ফুটতেও কিছুটা দেরি হয়। গত বছর ২৫ ডিসেম্বর থেকে দোকান্ডায় ফুলের মেলা শুরু হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে মেলা। মেলায় এ বার দেদার ফুল বিক্রি হয়েছে।
ছুটির দিন ছাড়াও শীতকালে প্রতি শনি ও রবিবার দোকান্ডায় বিপুল পর্যটক সমাগম হয়। এ বার বিশেষ বিশেষ দিনে ২০ হাজারেরও বেশি পর্যটকের ভিড় ছিল। চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ, অ্যাস্টার, করন, জিপসি, ডালিয়া, গাঁদা ইত্যাদি ফুলের পাশাপাশি দোকান্ডার ফুলের মেলায় ফুলের তৈরি হেয়ারব্যান্ডও এ বার প্রচুর বিক্রি হয়েছে। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে পরিবহণ থেকে আয়।
দোকান্ডা ফুলের মেলা কমিটির উদ্যোগে গ্রামের ১৫ জন মারুতি ভ্যানচালককে ক্ষীরাই স্টেশন থেকে মেলায় পর্যটকদের দোকান্ডায় নিয়ে আসা এবং পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ভাড়া মাথাপিছু ২০ টাকা। জানা গিয়েছে, ওই ১৫ জন মারুতি ভ্যান চালক মেলার মরশুমে দেড় লক্ষেরও বেশি টাকা আয় করেছেন।
প্রায় ৪০ টি টোটো নিয়মিত চলাচল করেছে। বাহান্ন দিনে টোটোচালকদের আয় হয়েছে গড়ে ৫০ হাজার টাকা। পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে দোকান্ডায় বহু ভাড়ার গাড়ি এসেছিল। সেই গাড়িগুলো দিনে গড়ে দেড় হাজার টাকা আয় করেছে বলে জানা গিয়েছে।
দোকান্ডার মারুতি ভ্যান চালক কালীপদ সামন্ত বলেন, ‘মেলায় দিনগুলোয় বাইরে কোথাও যেতে হয়নি। গ্রামেই পর্যটক বহন করে দিনে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা আয় হয়েছে।’
মানবেন্দ্র সামন্ত নামে অন্য এক গাড়ির চালক বলেন, ‘সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গাড়ি চালাতাম। সব গাড়ি চালকই এই ক'দিনে গড়ে দেড় লক্ষ টাকা আয় করেছেন।’