• আমবাগানে বাঁদর-হনুমানের উৎপাত, ফলন নষ্টের আশঙ্কা
    এই সময় | ১৬ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়, মালদা: এতদিন আমবাগানে বাঁদরের অত্যাচার ছিল। এ বার সমস্যা তৈরি করেছে হনুমান। ইংরেজবাজার এবং পুরাতন মালদা শহর সংলগ্ন আমবাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছে হনুমানের দল। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আমচাষিরা। আম গাছে মুকুল ধরেছে। বাঁদর ও হনুমানের যে ভাবে উপদ্রব শুরু করেছে তাতে লাভ তো দূরের কথা, আমের ফলন কতটা হবে, আতঙ্কে আমচাষিরা।

    তাঁদের অভিযোগ, পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর এবং ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত সংলগ্ন এলাকায় বাঁদরের চরম উৎপাত রয়েছে। আমের মুকুলের যতটা ক্ষতি করছে, তার থেকে বেশি ক্ষতি হবে যখন গাছে ফলন আসবে। বাঁদর তাড়াতে আম বাগানের মালিকেরা পাহারাদার রেখেছেন। তাতেও থেমে নেই উৎপাত।

    এ বার নতুন করে দুই শহরে দেখা মিলেছে হনুমানের। কোথা থেকে কী ভাবে তারা এল, সে ব্যাপারে পরিষ্কার করে জানাতে পারেননি আমচাষিরা। তাঁদের বক্তব্য, বিগত দিনে মালদায় হনুমানের উপদ্রব ছিল না। কেউ বা কারা বাঁদরের অত্যাচার বন্ধ করতেই হনুমান বাইরে থেকে এনেছে। কিন্তু সেটা যে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে আমের জন্য, কিছুটা হলেও আঁচ পাচ্ছেন চাষিদের অনেকেই।

    জেলা উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা জেলায় ৩২ হাজার হেক্টর জমি জুড়ে আম চাষ হয়ে থাকে। গত বছর প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকার কারণে গত বারের থেকে বেশি আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

    মালদায় এ বার শীতের প্রভাব কম ছিল। তার মধ্যে ফাল্গুন–চৈত্র মাসেই রোদের তাপ বাড়তে শুরু করায় প্রতিটি আম বাগানে ব্যাপকহারে মুকুল ধরেছে। উদ্যানপালন দপ্তরের জেলার উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক বলেন, ‘এ বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকার কারণে আমের ফলন অনেকটাই বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে চাষিরা রোগপোকা নিধনের ক্ষেত্রে নিজেদের বাগানগুলিতে ওষুধ স্প্রে করার কাজ শুরু করেছেন। আম গাছের পরিচর্যার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকেও বিভিন্ন ভাবে শিবির করে চাষিদের সচেতন করা হচ্ছে।’

    কিন্তু বাঁদরের পাশাপাশি হনুমানের তাণ্ডব চলতে থাকলে ফলনের ক্ষতি হবে বলে মনে করেন পুরাতন মালদার ব্লকের সাহাপুর গ্রামের আম চাষি নিবারণ মণ্ডল, দিলীপ ঘোষরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘মালদা–নালাগোলা রাজ্য সড়কের সাহাপুর এলাকার রাস্তার দু’ধারেই রয়েছে অসংখ্য আমের বাগান। রোগ পোকার আক্রমণ থেকে মুকুল রক্ষার করতে ইতিমধ্যে গাছে বিভিন্ন কীটনাশক স্প্রে করার কাজ শুরু হয়েছে। যেহেতু মুকুলগুলিতে কীটনাশক বিষ দিয়ে স্প্রে করা হচ্ছে। ফলে এই মুহূর্তে বাঁদর বা হনুমানের উপদ্রব বন্ধ রয়েছে। কিন্তু গাছে ফল ধরতে শুরু করলেই সমস্যা তৈরি হতে পারে। বনদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।’

    মালদার বিভাগীয় বনাধিকারিক জিজু জেসফার জোসেফ জানিয়েছেন, কোনও অভিযোগ এলে বিষয়টি দেখা হবে।

  • Link to this news (এই সময়)