• জড়িয়ে আছে কার্ল মার্কসের স্মৃতি, সেই শহরকে ইউরোপের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হল
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৬ মার্চ ২০২৫
  • ‘ইউরোপের সাংস্কৃতিক রাজধানী' উপাধির অর্থ কী? যে শহরকে এই মর্যাদা দেওয়া হয় তারাই বা বিষয়টি কীভাবে দেখেন? প্রতি বছর নতুন কোনও শহরকে এই উপাধি দেওয়া হয়৷ এ বছর জার্মান শহর কেমনিৎসকে সাংস্কৃতিক রাজধানী ঘোষণা করা হয়েছে৷

    ইউরোপের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে জার্মান শহর কেমনিৎসের স্লোগান হচ্ছে ‘সি দ্য আনসিন৷' অনেক অর্থ সহায়তায় শহরটি অজানা বিষয় দৃশ্যমান করে তুলতে চাচ্ছে৷ ২০২৫ সালে সহস্রাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে কেমনিৎস৷ কিন্তু জার্মানির পূর্বদিকের শহরটির বাসিন্দাদের মধ্যে এই বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে৷

    শহরটির সবচেয়ে পরিচিত ল্যান্ডমার্কগুলোর একটি সমাজতন্ত্রের জনকদের একজন কার্ল মার্কসের বিশাল মূর্তি৷ গ্রানাইটের এই স্মারকটি ঠান্ডা যুদ্ধের সময় তৈরি করেছিলেন এক সোভিয়েত ভাস্কর৷ কেমনিৎসের নাম তখন দেওয়া হয়েছিল কার্ল-মার্কস-স্টাড্ট৷ এবং সেটি পূর্ব জার্মানির অংশ ছিল৷ ১৯৭১ সালে এটিকে আদর্শ সমাজতান্ত্রিক শহর ঘোষণা করা হয়েছিল৷

    বর্তমানে ইউরোপের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে কেমনিৎস এমন সব মানুষের কাছে পৌঁছাতে চায়, যাঁরা সাধারণত শিল্পের প্রতি আগ্রহী নন৷

    শিল্পী ইয়ান কুমার বলেন, ‘পার্পল পাথ'-এ অংশগ্রহণকারীদের একজন আমি এবং আমি মনে করি এটা সাংস্কৃতিক রাজধানীর চমৎকার প্রকল্প৷ ফলে এটার অংশ হতে পেরে আমি আনন্দিত৷ কেমনিৎসের কাছের ছোট্ট শহর গেয়ার্সডর্ফে বাড়তি সাইজের বটল ক্যাপ মাইস বসাচ্ছি আমি৷'

    শীতলযুদ্ধের সময় কেমনিৎস আধুনিকতার প্রতীক ছিল৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শহরটিকে পরবর্তীতে সংস্কার করা হয়৷ ফ্রিৎস হেকার্ট জেলার ভবনগুলো এখনো পূর্ব জার্মানির কথা মনে করিয়ে দেয়৷ সাংস্কৃতিক রাজধানীতে এই ভবনগুলো বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷

    শিল্পী বেয়াটা ডুর্বার বলেন, ‘যেহেতু এই প্রিফেব্রিকেটেড বিল্ডিংগুলো দীর্ঘদিন ধরে শহরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে, তাই আমি ভেবেছি এখান থেকে শুরু করাটা দারুণ হবে৷ কেমনিৎসের ফ্রিৎস হেকার্ট এলাকার অধিকাংশই এই প্রিফাব স্ল্যাব দিয়ে তৈরি৷ আমি সেগুলো ১:৩০ স্কেলে ধূসর কংক্রিটের মতো দেখতে ছোট ক্রাস্ট পেস্ট্রি আকারে পুনঃনির্মাণ করেছি৷'

    পরিত্যক্ত কারখানায় সাংস্কৃতিক প্রকল্প

    নাটকীয় পরিবর্তনের সঙ্গে মিলিয়ে চলতে শিখেছে কেমনিৎস৷ শহরটি একসময় অর্থনীতির শক্তিকেন্দ্র ছিল৷ কিন্তু ১৯৯০ সালে দুই জার্মানির পুর্নমিলনের পর এখানকার অধিকাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে যায়৷ ফলে কয়েক হাজার মানুষ চাকুরি হারান৷

    বন্ধ হয়ে যাওয়া কিছু কারখানা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে৷ একসময়ের লোকোমোটিভ কারখানা হার্টমানফাব্রিক এখন সাংস্কৃতিক রাজধানী উদ্যোগের প্রধান কার্যালয় এবং ক্রিয়েট ইউ প্রকল্পের কেন্দ্র৷

    ক্রিয়েট ইউর আনে শ্যোবার বলেন, ‘আরও অনেক প্রকল্প রয়েছে, যেখানে মানুষ অংশ নিতে পারেন৷ তাঁরা তখন বলতে পারেন৷ আমি সিটিস্কেপের এখানে কিছু পরিবর্তন আনতে চাই৷ আমি শুধু ডানপন্থীরা এখানে মতামত দিক, তা চাই না৷ আমি এটাও চাই যে আমাদের মতো তরুণরা যাতে সত্যিকার অর্থে সৃজনশীল হয়ে ওঠে এবং সাংস্কৃতিক রাজধানী, ক্লাব বা অন্য কোনও মুক্ত পরিবেশে সহায়তা করে৷ এখন অনেক সুযোগ আছে৷'

    সাংস্কৃতিক রাজধানী কেমনিৎস শীঘ্রই শিল্পের মাধ্যমে নিজেকে আবার খুঁজে পাবে৷
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)