• ‘পেমেন্ট সাকসেসফুল’, স্পিকারে বাজলেও টাকা অ্যাকাউন্টে যায়নি! সাইবার জালিয়াতির নতুন ফাঁদ
    আনন্দবাজার | ১৬ মার্চ ২০২৫
  • শপিং মল থেকে ফুটপাতের ফুচকাওয়ালা, সব্জির হাট থেকে অটোস্ট্যান্ড। রোজকার লেনদেনে এখন ইউপিআই (ইউনিফায়েড পেমেন্টস্ ইন্টারফেস)-এর রমরমা। দোকানে দোকানে প্রাপকের আইডি-তে টাকা পৌঁছোলেই স্পিকারে বেজে ওঠে ‘পেমেন্ট সাকসেসফুল’। অনেকে তখন মোবাইল খুলে দেখেন না লেনদেনের তথ্য। এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে সাইবার জালিয়াতরা। নকল পেমেন্ট অ্যালার্টের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। সারা রাজ্যে এমন কয়েকটি অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। রাজধানী কলকাতা ছাড়াও নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদে ছড়িয়েছে প্রতারণাচক্র। তদন্তে পুলিশের সাইবার শাখা।

    পুলিশ সূত্রে খবর, বহুল ব্যবহৃত একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে গোপনে চলছে ‘ইউপিআই পেমেন্ট চ্যানেল।’ এটি দেখতে একদম ফোনপে, গুগল পে কিংবা পেটিএমের মতো। গ্রাহককে ওই চ্যানেলের মাধ্যমে কিউআর কোড স্ক্যান করতে বলা হয়। টাকা পাঠানোর পরে প্রেরকের মোবাইলে ভেসে ওঠে ‘সাকসেসফুল’ নোটিফিকেশন। স্পিকারেও বাজে টাকা ঢোকার আওয়াজ। কিন্তু আসলে টাকা পৌঁছোয় না ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে। দিনের শেষে হিসাব মেলাতেই ধরা পড়ে গোলমাল। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং কলকাতা থেকে এমন কিছু অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত।

    গোটা ঘটনার নেপথ্যে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতের সাইবার জালিয়াতরা রয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। আর এ রাজ্যের মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ‘সলমন’ নামে এক প্রতারকের খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। মনে করা হচ্ছে, মুর্শিদাবাদে এই চক্রের মূলচক্রী তিনিই। যদিও সলমন তাঁর আসল নাম কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।

    পুলিশ সূত্রের খবর, দিল্লি, হরিয়ানা ও রাজস্থানে প্রথম এই রকমের অভিযোগ জমা পড়েছিল। গত বছর ডিসেম্বরে এমন প্রতারণার ঘটনায় মোট ৭০ জনকে গ্রেফতার করে হরিয়ানা পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় রাজস্থান, দিল্লির ১২ জন প্রতারককে। জানা যাচ্ছে, জালিয়াতরা তৈরি করেছে ইউপিআই অ্যাপের ক্লোন সফ্‌টঅয়্যার। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গে এই চক্র সবে জাল বিছিয়েছে। ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে সচেতনতা জরুরি। মোবাইলে অচেনা এবং অপরিচিত লিঙ্ক বা চ্যানেলে ক্লিক করতে বারণ করছেন তাঁরা। আর অসুবিধায় পড়লে সরকারি হেল্পলাইন ১৯৩০-এ অভিযোগ জানাতে বলছেন তাঁরা। বহরমপুর পুলিশ জেলার সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, “সাইবার অপরাধদমন শাখা সতর্ক রয়েছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)