বরুণ সেনগুপ্ত: প্রেমেও এবার পারমিশন? অনুমতি ছাড়া করা যাবে না বিয়েও! স্রেফ 'ফতোয়া' জারি নয়, অনুমতি না নেওয়ায় তৃণমূল নেতা এক প্রেমিককে রীতিমতো মারধর করেছেন বলেও অভিযোগ। অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে থানায়। অভিযুক্ত পলাতক। উত্তর ২৪ পরগনা খড়দহের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, খড়দহের দোপেড়ে এলাকার বাসিন্দা আজহারউদ্দিন। একসময়ে ফুটবলার হিসেবে যথেষ্ট নামডাক ছিল তাঁর। স্থানীয় এক মহিলার সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছেন আজহার। ৩ বছরের সম্পর্ক। বস্তুত, দুই পরিবারের সম্মতিতে তাঁদের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গিয়েছে।
এদিকে দোপেড়ে এলাকারই তৃণমূল নেতা সুকুর আলি। তাঁর ছেলে অন্তু। সে নাকি ফতোয়া জারি করেছে, বিনা অনুমতিতে প্রেম-বিয়ে করা যাবে না! আজহারের দাবি, অনুমতি না নেওয়ায় তাঁকে মারধর করেছেন অন্তু। ওই যুবকের আর্জি, 'আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই। মাননীয় বিধায়ককে অনুরোধ, ব্য়াপারটা দেখুন। আমি তো প্রাক্তন ফুটবলার। আমি তো বিরাট কিছু করতে পারব না। কিন্তু আমায় যদি মারে, প্রাণে মারা হুমকি দেয়, কার কাছে যাব'!
আজহারের প্রেমিকা বলেন, 'ওরা আমাদের অনেক দিন থেকে টার্গেট করেছিল অপমান করার জন্য। আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। ওদের সহ্য় হচ্ছে না।পার্টির ছেলেরা আমাদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে'। কোন পার্টি? ওই মহিলার জবাব, 'তৃণমূল'।
এদিকে পলাতক ছেলে কার্যত সমর্থনই করেছেন তৃণমূল নেতা সুকুর আলি। তাঁর সাফাই, 'যে বিয়ে করবে, যাকে বিয়ে করবে, তারা করতে পারে। কিন্তু বিয়ে করবে কিনা, জানি না। স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছে কিনা, এখনও ওর ছেলে সম একজনকে বিয়ে করবে। সে যাই হোক, বয়সটা ফ্যাক্টর করে না। একটা জিনিস ফ্যাক্টর করে যে যদি ইউরোপ হয়ে যায়, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু ভারতের কৃষ্টি-সংস্কৃতি, বাংলার কৃষ্টি সংস্কৃতি। নোংরামিটা না করলেই হল রাস্তাঘাটে। ও বিয়ে করুক না করুক'।
বিজেপির স্থানীয় যুবনেতা জয় সাহার কটাক্ষ, 'রাজ্য়ে অনেকে মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কে কী খাবে, কে কী পরবে, কে কোথায় যাবে, সেটাও রাজ্য় সরকার ঠিক করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়ে গিয়েছে। ফলে তাদের নেতার এভাবে আচরণ করবে, সেটাই তো আশা করা যায়। বেশি কিছু তো আশা করা যায় না। আজ বাড়ি ফিরলেও পয়সা দিতে হবে, কালকে বিয়ে করলেও পয়সা দিতে হবে'।