ওয়েবেলে আইপ্যাক কর্মীদের ঢুকিয়ে ভোট লুট করা হতে পারে! আশঙ্কা সুকান্তর
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৭ মার্চ ২০২৫
রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন হতে এখনও বছর খানেক বাকি। তার মধ্যেই ফের একবার সংবাদ শিরোনামে ভোট কুশলী সংস্থা 'আইপ্যাক'! তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করা এই কর্পোরেট সংস্থা যে তাদের কাছে এই মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেই বার্তা ইতিমধ্যেই দিয়েছে রাজ্যের শাসক শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব।
আর, তারপরই আইপ্যাক নিয়ে ফের একবার শুরু হয়েছে কাজিয়া। বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এর আগে অভিযোগ করেছিলেন, আইপ্যাক কর্মীদের একাংশকে নাকি চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে ওয়েবেলে চাকরি দেওয়া হচ্ছে! রবিবার সেই একই অভিযোগ করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। উপরন্তু, আরও এক ধাপ এগিয়ে আইপ্যাক-এর কর্মীদের কার্যত ভোট লুটেরা বলে দেগে দিয়েছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে সুকান্তর যে বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে, সেই অনুসারে - আইপ্য়াক-কে নিশানা করে তিনি বলেছেন, 'বিরোধী দলনেতা আগেই বলেছেন ওয়েবেলে প্রচুর আইপ্যাক-এর কর্মচারীকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে তাঁদের ব্যবহার করা হতে পারে ভোট লুটের ক্ষেত্রে।'
এখানেই থামেননি সুকান্ত। তাঁর মতে, ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশে আইপ্যাক-এর মতো কোনও সংস্থা যদি 'ঠান্ডা ঘরে বসে কাজ করে', তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু, সুকান্ত আশঙ্কা করছেন, তৃণমূল কংগ্রেস আইপ্যাক-কে মাঠে নামিয়ে ভোট লুট করতে পারে! এমনকী, অতীতে তিনি এর প্রমাণও পেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন সুকান্ত। টিভি নাইন বাংলা-র অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সুকান্তর মন্তব্যে অন্তত তেমনই বার্তা রয়েছে।
তাঁর অভিযোগ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে এক-একটি ভোট কিনেছিল আইপ্যাক! আবারও তেমনটা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বিজেপি সাংসদের কথায়, 'গণতন্ত্রের স্বাভাবিক নিয়ম আছে। এই ধরনের এজেন্সি ঘরে বসে কাজ করুক ঠিক আছে। কিন্তু একুশের ভোটে আমরা দেখেছিলাম মাঠে নেমে কাজ করছে। এরা সেই সময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ৫০০ টাকা করে ঢুকিয়েছিল। আমি ধরেও ছিলাম আমাদের ওইখানে কয়েকজনকে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই ধরনের এজেন্সির ব্যবহার কি আদৌ ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে স্বাস্থ্যকর? ঠান্ডা ঘরে বসে কাজ করলে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আমার মতে, নীচে নেমে যদি জনগণের মতকে পরিবর্তনের চেষ্টা করে, আমার মনে হয় সেক্ষেত্রে ভারতে তর্ক-বিতর্ক হওয়া প্রয়োজন আছে।'
প্রসঙ্গত, আইপ্যাক-কে নিয়ে বিতর্ক চলছে তো চলছেই। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, যখন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইপ্যাক নিয়ে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। অথচ, পরে নবান্নে সেই আইপ্যাক কর্ণধারের সঙ্গেই বৈঠক করেন তিনি!
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো আগাগোড়াই আইপ্য়াক-এর পাশে থেকেছেন। এদিকে, কিছু লোক আইপ্যাক-এর নাম করে টাকা তুলছে, এমন অভিযোগও সামনে এসেছে। এই বিষয়ে অভিষেক নিজে মানুষকে সতর্ক থাকতে যেমন বলেছেন, তেমনই এটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন, আইপ্যাক তাঁদের কাছে আপাতত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রেক্ষাপটে আইপ্যাক-কে সমানে তোপ দেগে গিয়েছেন শুভেন্দু। অন্যদিকে, মদন মিত্র, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মতো প্রবীণ তৃণমূল নেতাও আইপ্যাক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। আর এবার সুকান্ত মজুমদার আইপ্যাক কর্মীদের গতিবিধি নিয়ে প্রবল আশঙ্কা প্রকাশ করলেন!