আগামী বছর রাজ্যের বিধানসভা ভোট। বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে বাংলার শাসকদল। তবে বিধানসভা ভোটে গুরত্বপূর্ণ ফল পেতে শাসকদলের কাছে এখন সব থেকে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ডুপ্লিকেট এপিক কার্ড বা ভুয়ো ভোটার। ভুয়ো ভোটাররাই তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এখন সবথেকে গুরত্বপূর্ণ বিষয়। চলতি বছরের মধ্যেই ভুয়ো ভোটার সমস্যার সমাধানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে টিএমসি। ভুয়ো ভোটার ইস্যুকে প্রাধান্য দিয়েই লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ মমতার দল। এই ইস্যুতে ধীরে চলো নীতি নিয়ে চলতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টিতে ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করলেও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন এ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে সম্প্রতি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের কয়েকজন অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ও প্রাত্তন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে আগামী ২২ মার্চ চেন্নাইয়ে এই ইস্যুতে বৈঠকে তৃণমূল নেত্রীকে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে সতর্ক করেছেন আসন পুনর্বিন্যাস বিষয়ে। যদিও সেই সময় মমতার লন্ডন সফর থাকায় তিনি নিজে চেন্নাইয়ের বৈঠকে থাকতে পারবেন না বলে জানা গিয়েছে। পরিবর্তে তৃণমূলের কোনও উচ্চপর্যায়ের নেতাকে তিনি সেই বৈঠকে পাঠাতে পারেন। তবে সেই নেতার নাম এখনো দলীয় স্তরে ঠিক হয়নি বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, মমতাকে পাঠানো চিঠিতে সীমানা পুনর্বিন্যাসের ফলে বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলির লোকসভার আসন কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্ট্যালিন। তিনি লিখেছেন, ২০২৬ সালের পরে যদি কেবল জনসংখ্যার পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে সংসদীয় আসন বণ্টন করা হয় তবে তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, কর্ণাটক, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং পাঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলি প্রতিকূলভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
আসন পুনর্বিন্যাস ইস্যু নিয়ে তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান সাংসদ জানিয়েছেন, তৃণমূল নেত্রী স্ট্যালিনের আমন্ত্রণে সৌজন্য রক্ষায় প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেও আসন পুনর্বিন্যাস ইস্যু নিয়ে এখনই কিছু ভাবতে নারাজ। আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে তৃণমূলের ভাবনাচিন্তা রয়েছে, তবে এ বিষয়ে তড়িঘড়ি কিছু করবে না বলেও জানিয়েছেন বর্ষীয়ান সাংসদ। তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডুপ্লিকেট এপিক কার্ডের বিষয়টিই আমাদের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। বিধানসভা ভোটের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা তৈরির আগেই ডুপ্লিকেট এপিক কার্ডের বিষয়টির সমাধান করাই আমাদের এখন প্রধান কাজ। একই এপিক নম্বরে বাংলার ভোটার ও ভিন রাজ্যের ভোটারদের নাম রয়েছে।
এমনকী, বাংলার আলাদা আলাদা জেলাতেও একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটার রয়েছে। এই সংখ্যা কত সেটা নির্বাচন কমিশন আমাদের এখনও জানাতে পারেনি। কবে জানাবে সেটাও স্পষ্ট করেনি। তিন মাসের মধ্যে এই বিষয়টির সমাধান করবে বলে কমিশন বলেছে ঠিকই, কিন্তু কাজটা কত বড় সেটা না জেনেই কীভাবে সময়সীমার কথা কমিশন বলছে সেটাও বড় প্রশ্ন।’