চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
আগামী দু’বছরের মধ্যে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের প্রায় ৫০০ কিলোমিটার রেলপথে অটোমেটিক ব্লক সিগন্যালিং (এবিসি) ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে। তার জন্য এখন জোরকদমে কাজ চলছে। প্রথম ধাপে এই কাজ করতে প্রায় ৫৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রেল। কাটিহার থেকে নিউ জলপাইগুড়ি হয়ে গুয়াহাটি পর্যন্ত ধাপে ধাপে এবিসির কাজ চলছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মধ্যে শুধুমাত্র কাটিহার ডিভিশনের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে আলুয়াবাড়ি রোড স্টেশন পর্যন্ত অটোমেটিক ব্লক সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু রয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ছ’মাসের মধ্যে আলুয়াবাড়ি রোড স্টেশন থেকে কিষানগঞ্জ পর্যন্ত তা চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার ডিভিশন, রঙ্গিয়া ডিভিশন– সহ সর্বত্রই এই কাজ হচ্ছে। রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আধুনিক এই প্রযুক্তির কাজ শেষ হলে একটি সেকশনে বেশি করে ট্রেন চালানো যাবে। ট্রেন পরিচালনায় সময়ও বাঁচবে।
উল্লেখ্য, এখন শুধুমাত্র অ্যাবসোলিউট ব্লক সিগন্যালিং ব্যবস্থাতেই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সিংহভাগ অংশে ট্রেন পরিচালনা করা হয়। এই পদ্ধতিতে একটি স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার পর পরবর্তী স্টেশনে না পৌঁছনো পর্যন্ত অন্য কোনও ট্রেনকে ছাড়া হয় না। ফলে অনেক সময়ে একাধিক স্টেশনে কমবেশি ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। এতে সময় নষ্ট হয়, রেলের খরচও বাড়ে। ট্রেনের দেরিতে চলায় যাত্রীদেরও ক্ষতি হয়।
কিন্তু অটোমেটিক ব্লক সিস্টেম থাকলে কোনও ট্রেন ছাড়তে আগের ট্রেনটিকে আর স্টেশনে ঢোকা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। দু’টো স্টেশনের মাঝে একাধিক সিগন্যাল থাকে। এক থেকে তিন কিলোমিটার পর পর সিগন্যালগুলো বসানো হয়। এই নতুন সিস্টেমে একটি স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার পর সেটা প্রথম সিগন্যাল অতিক্রম করলেই পরবর্তী ট্রেনকে ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাতে একই সেকশনে কিংবা দু’টো স্টেশনের মাঝে একই সময়ে একাধিক ট্রেন চালানো যায়। যাত্রীদের সময়ও বাঁচে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা বলেন, ‘যে গতিতে কাজ চলছে তাতে দু’বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে মনে হয়। আধুনিক এই ব্যবস্থা চালু হলে রেল ও যাত্রীরা সকলেই উপকৃত হবেন।’