পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার গিধগ্রামের ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছিল রাজ্যজুড়ে। নদিয়ায় তেমনই অভিযোগ এ বার। কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারীর দাবি, তফশিলি জাতিভুক্ত হওয়ায় তাঁদের শিব মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। জেলা প্রশাসন বলেছিল, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে নিতে। কিন্তু তার পরও কয়েকজন মন্দিরে ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন। সামনেই গাজন আসছে। গাজনের সময়ে শিব মন্দিরে ঢোকার অনুমতি চেয়ে এ বার সেই তফশিলি জাতিভুক্তরা হাইকোর্টে।
এমন ঘটনায় অত্যন্ত বিরক্ত হন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। প্রশ্ন করেন, ‘কী করে এটা হয়? পুলিশের ভূমিকা কী? একটা মানুষ তাঁর অধিকার পাবেন না! এটা তো বাংলায় ছিল না। এমন সমস্যা এখনও বাংলায় নেই বলেই বিশ্বাস করি। কেন তাঁরা উৎসবে যোগ দিতে পারবেন না। কিসের এত ইগো? তাহলে পুলিশ কি করছে? আবার বলছি এই সমস্যা বাংলায় ছিল না। তা হলে বলতে বাধ্য হচ্ছি, এটা পুলিশের অক্ষমতা। ওসি নন, কোনও সিনিয়র অফিসারকে দায়িত্ব নিতে হবে। পিছনে যদি অন্য কোনও কারণ থাকে, সেটাও খুঁজে দেখা পুলিশের কাজ। অফিসে বসে বসে রিপোর্ট তৈরি করছে।’
নদিয়ার বৈরামপুরে কালীগঞ্জ থানা এলাকায় প্রাচীন একটি শিব মন্দির রয়েছে। তা সাধারণের ব্যবহারেরই মন্দির বলে নথিতেও রয়েছে। অথচ, এখানকার রজক বা ধোপা সম্প্রদায়ের মানুষকে গাজনে অংশ নিতে দেওয়া হয় না বলে আদালতে জানান মামলাকারী। তাঁদের আবেদন, গাজন উৎসবে অংশ নিতে চান তাঁরা। গাজনের সন্ন্যাসী হতে চান। এ দিনের শুনানি পর্বে বিচারপতি নির্দেশ দেন, ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে হবে। শুক্রবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগেই প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরের নিয়ম ভেঙে কাটোয়ার গিধগ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দারা শিব মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পান। এ মন্দিরের দেবতা গিধেশ্বর। অভিযোগ ছিল, মন্দিরে প্রথম থেকে চর্মকার বা চামার সম্প্রদায়ের মানুষের ঢোকার অধিকার ছিল না। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবশেষে সেই অধিকার ছিনিয়ে নেন তাঁরা। এ বার একই দাবি নিয়ে হাইকোর্টে নদিয়ার বৈরামপুরের রজকরা।