এই সময়, কৃষ্ণনগর: ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট ইস্যুর অভিযোগে গ্রেপ্তার হলো নদিয়ার সাহেবনগর পঞ্চায়েতের সহায়ক রাজীব বিশ্বাস। থানায় অভিযোগ হওয়ার পরেই পালিয়ে বেড়ালেও শেষরক্ষা হয়নি। পলাশিপাড়া বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পলাশিপাড়া পুলিশ। রবিবার ধৃতকে তেহট্ট আদালতে তোলা হলে আট দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশদিয়েছেন বিচারক।
কৃষ্ণনগরের পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার (গ্রামীণ) উত্তম ঘোষ বলেন, ‘হেফাজতে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’ জানা গিয়েছে বিজেপি পরিচালিত এই পঞ্চায়েতের এক বিরোধী সদস্য কয়েক দিন আগে অভিযোগ তুলেছিলেন ভুয়ো সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কিছু গরমিলের হদিশ পেতেই বিডিও অফিস থেকে ওই পঞ্চায়েতের কর্মীর নামে থানায় অভিযোগ করা হয়।
তৃণমূলের তেহট্ট দুই ব্লকের সভাপতি দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘সাংগঠনিক ভাবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি এই পঞ্চায়েতে গত দু’বছরে প্রায় ৪০০ ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে। আজকের দিনে এত নন-ইনস্টিটিউশনাল ডেলিভারি কোথাও হয়? এখানে বাড়িতে বাচ্চা জন্ম নিয়েছে দেখিয়ে এই সার্টিফিকেটগুলো ইস্যু হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান দায় এড়াতে পারেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’
এ দিকে পঞ্চায়েত প্রধানের পক্ষে বিজেপি সদস্য সৌমিত্র ঘোষাল বলেন, ‘প্রধানকে অন্ধকারে রেখে ওই কর্মী দুর্নীতি করেছেন। শেষ পঞ্চায়েত ভোটের আগে এখানে তৃণমূলের বোর্ড ছিল। দুর্নীতি তখন থেকেই হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে দুর্নীতি হয়েছে বলে জেনেছি।’ জানা গিয়েছে, ভুয়ো সার্টিফিকেট নিয়ে ধরা পড়ার একটি ঘটনায় হরিণঘাটা থানার পুলিশ জানতে পেরেছিল এই পঞ্চায়েত থেকে ইস্যু করা হয়েছিল একটি বার্থ সার্টিফিকেট।
কয়েক দিন আগে হরিণঘাটা পুলিশ এই পঞ্চায়েতে দুর্নীতির তদন্তে এলে ব্যাপারটি সামনে আসে। ১৯৮২-৮৩ সালের ভুয়ো জন্ম সার্টিফিকেটও ইস্যু করা হয়েছে এখান থেকেই। কয়েক দিন আগে হাঁসখালি থানার বগুলা-২ পঞ্চায়েত এবং চাপড়া থানার হৃদয়পুর পঞ্চায়েতেও প্রায় একই রকম অভিযোগে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত কর্মীরা গ্রেপ্তার হন। ওই দুই পঞ্চায়েতে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে চাপানউতোর চলার মাঝেই এ বার দু'পক্ষ সরব সাহেবনগর পঞ্চায়েত নিয়ে।