• তসলিমাকে ফেরানো হোক কলকাতায়, রাজ্যসভায় আবেদন শমীকের, কৃতজ্ঞ লেখিকা! চাপে TMC?
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৭ মার্চ ২০২৫
  • তসলিমা নাসরিন। তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে ফেরাতে চেয়ে বক্তব্য রাখলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। প্রথমেই জেনে নিন রাজ্যসভায় কী বলেছেন শমীক?

    তিনি বলেছেন, 'পরিস্থিতির জেরে বাধ্য় হয়ে তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশ ত্য়াগ করেছিলেন। তিনি কলকাতায় আসেন। আর সেই সময় তৎকালীন এক কংগ্রেস নেতা তাঁর বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সময় কংগ্রেস তাঁকে বহিষ্কার করেছিল। এরপর তৃণমূল তাঁকে নিয়ে নেয়।…এরপর পরিস্থিতির জেরে তসলিমা কলকাতা ছাড়তে বাধ্য় হন।' 

    এরপর অত্যন্ত আবেগের সঙ্গে শমীক বলেন, 'তসলিমার কাছে কলকাতা প্রাণের শহর। তিনি কলকাতায় ফিরে আসতে চান। বাংলায় কথা বলতে চান। বাংলায় কবিতা লিখতে চান। বাংলায় ছদ্ম প্রগতিশীলতার আড়ালে চূড়ান্ত তোষণ, মৌলবাদের কাছে আত্মসমর্পণের দিন শেষ হোক। তসলিমার প্রত্যাবর্তন হোক।' রাজ্যসভায় জানিয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। 

    এরপরই ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন তসলিমা। সেখানে তিনি লিখেছেন,' রাজ্যসভার সাংসদ কমিউনিস্ট পার্টির গুরুদাস দাশগুপ্ত ২০০৭ সালে আমাকে নিয়ে প্রথম কথা বলেছিলেন ভারতের সংসদে। আমি তখন সবে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকার দ্বারা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিতাড়িত। বাংলার টানে, প্রাণের টানে যে শহরে বসবাস শুরু করেছিলাম, সেই শহর থেকে কখনও যে বিতাড়িত হবে হবে, কল্পনাও করিনি। শ্রদ্ধেয় গুরুদাস দাশগুপ্ত প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি দাবি জানিয়েছিলেন আমাকে যেন পশ্চিমবঙ্গে ফিরতে দেওয়া হয়। তারপর দীর্ঘ বছর কোনও রাজনীতিক আমার কলকাতায় ফেরা নিয়ে কোনও কথা বলেননি। মাঝখানে আকাশ আট টিভি চ্যানেল থেকে সম্প্রচার হতে যাচ্ছিল দুঃসহবাস নামে আমার লেখা যে মেগাসিরিয়ালটি, সেটির সম্প্রচার বর্তমান সরকার বন্ধ করে দেয়। আজ, ১৮ বছর পর রাজ্যসভার সাংসদ ভারতীয় জনতা পার্টির শমীক ভট্টাচার্য আমাকে কলকাতায় ফেরানোর দাবি জানালেন সংসদে। জানিনা, কলকাতায় শেষ পর্যন্ত আমার ফেরা হবে কি না, তবে তিনি যে আমার কথা মনে করেছেন, মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়ানোর অপরাধে নিজের জন্মভূমি থেকে নির্বাসিত আমি, বাংলায় লেখালেখি চালিয়ে যেতে হলে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি পরিবেশে বাস করা আমার জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ, তা তিনি উপলব্ধি করেছেন বলে তাঁকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।' লিখেছেন তসলিমা। 

    এদিকে শমীকের এই আবেদনকে ঘিরে কার্যত মহা অস্বস্তিতে তৃণমূল। অনেকের মতে, একদিকে মুক্তমনের কথা বলে শাসক দল, অন্যদিকে তসলিমা জায়গা পান না কলকাতায়। ' তবে তার জন্য যুক্তি দেখিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। 

    তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দাবি, 'যখন তসলিমাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বের করেছিল তখন তো সিপিএম সরকার ছিল। তখন শমীক ভট্টাচার্য কী করছিলেন? তখন বিজেপির একটা কথা ছিল না কেন? আবহাওয়া তৈরি করছে হিন্দু মুসলিমের ঝগড়া লাগানোর জন্য। আইনশৃঙ্খলা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতে। সেখানে সরকার ঠিক করবে কাকে আসতে দেবে আর আসতে দেবে না। ল অ্যান্ড তো আগে নাকি শমীক ভট্টাচার্য আগে নাকি শুভেন্দু অধিকারী আগে….'

    এদিকে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, তসলিমা নাসরিন কবি, লেখিকা ঠিকই আছে। কিন্তু তাঁকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে বাংলার রাজনীতিকে উত্তপ্ত করার মাধ্য়মে বাংলার পরিবেশটাকে নষ্ট করা ঠিক নয়। 
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)