• মোবাইল বিসর্জন- ডায়েরি পোড়ানো, নিয়োগ দুর্নীতির প্রমাণ লোপাটে ‘কাকু’র সাত পথ
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৭ মার্চ ২০২৫
  • নিয়োগ  দুর্নীতি মামলায় নানাভাবে প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করা হয়েছে। আর সেই প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অন্য়তম কারিগর কখনও কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। কখনও আবার অন্যদেরকে দিয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছে। প্রমাণ লোপাটের জন্য় নানা ধরনের কায়দা করা হয়েছিল।আনন্দবাজার.কমের খবর অনুসারে জানা গিয়েছে সব মিলিয়ে সাতটি পদ্ধতিতে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছিল। আসলে বিভিন্ন সময়ে সাক্ষীরা যে বয়ান দিয়েছেন তার উপর ভিত্তি করে এই সাতটি পথকে চিহ্নিত করতে পেরেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। 

    এবারে দেখে নেওয়া যাক ঠিক কীভাবে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছে? নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিটে এই প্রমাণ লোপাটের সাতটি পদ্ধতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। 

    কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কালীঘাটের কাকুর এক সহযোগীর সন্ধান পেয়েছিল। সেই সহযোগী মূলত হিসেব রাখতেন। কার কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হল তারই হিসেব রাখা হত ডায়েরিতে। কম টাকা নয়তো যে মনে রাখা যাবে। সেই বিপুল অঙ্কের টাকার হিসেব যাতে গুলিয়ে না যায় তার হিসেব রাখা হত। পরে সেই কালীঘাটের কাকুর নির্দেশেই সেই ডায়েরি ওই ব্যক্তি পুড়িয়ে ফেলেন। তবে তারপরেও সিবিআইয়ের হাতে আসে এই ধরনের আরও ১০টি ডায়েরি। 

    চাকরির জন্য ঘুষ। সুজয়কৃষ্ণের উপস্থিতিতে একবার একটি ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয়েছিল। সেটা আসলে ঘুষের ভিডিয়ো। পরে সেকথা সিবিআইকে জানিয়েছিলেন এক সাক্ষী। দীর্ঘদিন ধরে তার ফোনে সেই ভিডিয়ো ছিল। পরে মামলা নিয়ে ইডি ও সিবিআই তৎপর হয়ে ওঠে। আর তারপরই সুজয়কৃষ্ণ ফোন করে অনুরোধ করেছিলেন যাতে সেই ভিডিয়ো মুছে ফেলা হয়। তাঁর কথাতেই ফোন থেকে ভিডিয়ো মুছে ফেলা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন ওই সাক্ষী।

    এক সাক্ষী তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন ঘুষের টাকা সুজয়কৃষ্ণকে তুলে দেওয়ার ভিডিয়ো তিনি গোপনে করেছিলেন। পরে প্রার্থী চাকরি না পাওয়ায় তিনি সেই ভিডিয়ো দেখিয়ে কালীঘাটের কাকুকে ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছিলেন। এরপরই সুজয়কৃষ্ণ পালটা হুমকি দেন ও ফোন কেড়ে নর্দমায় ফেলে দেন। এবং নিজের দুটো মোবাইল আদিগঙ্গায় ফেলে দিয়েছেন বলেও কাকু জানিয়েছিলেন ওই সাক্ষীকে। 

    এক সাক্ষী সিবিআইকে জানিয়েছিলেন মামার নির্দেশে তিনি ল্যাপটপে চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা তৈরি করে রাখতেন। পরে সেই হার্ডডিস্ক ক্র্যাশ করে। তিনি আর চেষ্টা করেও সেই তালিকা পাননি। 

    সুজয়কৃষ্ণের সঙ্গেই কাজ করতেন এক মহিলা কর্মী। তাঁর বয়ানে সিবিআই জানতে পারে যে একাধিক এজেন্টের মেল তাঁর কাছে আসত। ওই মেল থেকেই তিনি জানতে পারেন সুজয়কৃষ্ণ প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, এসএসসি, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগের সঙ্গে জড়িত। পরে একজনের নির্দেশে তাঁর মোবাইল থেকে যাবতীয় নথি মুছে ফেলতে হয়েছিল। 

    সুজয়কৃষ্ণ সহ একাধিক সাক্ষী তাঁদের ইমেল অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেই মেলেই যাবতীয় তথ্য় আদানপ্রদান হত

    লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের এক মহিলা কর্মী জানিয়েছেন তদন্তকারীদের কেউ দেখা করতে এলে আগে সুজয়কৃষ্ণকে জানাতে হত। তিনি অনুমতি দিলেই ভেতরে প্রবেশ করা যেত। তবে সেই সুজয়কৃষ্ণ তাঁর দফতরের সব সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দিতেন। 
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)