• বিজেপির চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর পাল্টা তৃণমূলের শিশু উৎসব
    এই সময় | ১৭ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়, আসানসোল: এ বার সাংস্কৃতিক জমি দখলের লড়াই আসানসোলে। বিজেপির ফিল্‌ম ফেস্টিভ্যালের পাল্টা তৃণমূলের শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। আগামী ২১ মার্চ থেকে তিন দিনের ওই উৎসব ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে শাসক শিবিরে।

    ধর্মভিত্তিক তরজা কিংবা শাসক–বিরোধী কুকথার জোয়ারে এমন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আখেরে বঙ্গ রাজনীতির পক্ষে ইতিবাচক ক্ষেত্র তৈরি করবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। ঘটনার সূত্রপাত মাসখানেক আগে। আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির উদ্যোগে তৈরি হওয়া কালচারাল অ্যান্ড লিটারারি ফোরাম অফ বেঙ্গল গত ফেব্রুয়ারির চার থেকে সাত তারিখ পর্যন্ত চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করেছিল।

    উৎসবের উদ্বোধনে এসেছিলেন সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেনের ছবির নায়িকা মমতা শঙ্কর। উৎসবে তথ্যচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ছাড়াও বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, নেপালি, অসমীয়া ভাষার ছবি প্রদর্শিত হয়। ওই সময়ে জিতেন্দ্র বলেছিলেন, ‘আসানসোলে এক সময়ে প্রতি বছর রবীন্দ্রভবনে চলচ্চিত্র উৎসব হতো। তার পর দীর্ঘ দিন সেটা বন্ধ হয়ে রয়েছে। সেজন্যেই আমরা এটা চালু করলাম।’

    এর পরেই আসরে নামে তৃণমূল। বিজেপি পরিচালিত উৎসবের কয়েক দিন পরেই আসানসোল রবীন্দ্রভবনে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় আসানসোল সঙ্গীত উৎসব। ওই উৎসব মঞ্চেই মন্ত্রী মলয় ঘটক রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে অনুরোধ করে বলেছিলেন, আসানসোলে একটা চলচ্চিত্র উৎসব করা যায় কি না। তখনই ইন্দ্রনীল জানিয়ে দেন, মন্ত্রী মলয় ঘটকের উদ্যোগে এখানে শিশু চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করা হবে। রাজ্য সরকার তাতে সাহায্য করবে। ইন্দ্রনীল সে দিন জানিয়েছিলেন, রাজ্যের চারটি জায়গায় তাঁরা শিশু চলচ্চিত্র উৎসব করবেন। যার একটি ইতিমধ্যে কলকাতায় হয়ে গিয়েছে। আসানসোলেও করা হবে।

    সেই অর্থে অতীতে আসানসোলে কখনও শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র উৎসব হয়নি। সেদিক থেকে এটা প্রথম। জানা গিয়েছে, উৎসবের প্রথম দিনেই দেখানো হবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত সোনার কেল্লা সিনেমাটি। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে হীরক রাজার দেশে, পাতালঘর, রিও টু, হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অফ সিক্রেটস–এর মতো ছবি। ২১ থেকে ২৩ মার্চ মোট নয়টি ছবি এখানে প্রদর্শিত হবে। সাহিত্যিক অমল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আসানসোলে সাহিত্য, শিল্পকলা, সিনেমা নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা যত বেশি হবে তত বেশি করে সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে। উপকৃত হবেন সৃষ্টিশীল মানুষেরা।’

    তবে এই প্রদর্শনীকে সমর্থনই জানাচ্ছেন জিতেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘আসানসোলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগকে আমরা অবশ্যই সমর্থন জানাব।’ অন্য দিকে, তৃণমূলের রাজ্য নেতা ভি শিবদাসনের কথায়, ‘ভালো কাজের প্রতিযোগিতা হলে অবশ্যই সকলের লাভ হবে। তৃণমূল নেত্রী আমাদের সকলকে শিখিয়েছেন, সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নের কথা ভাবতে। শিশু চলচ্চিত্র উৎসব শুধু শিশুদের জন্য নয়, প্রবীণদের স্মৃতিকেও জাগিয়ে তুলবে।’

  • Link to this news (এই সময়)