পুকুরের মালিকানা নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। যে পুকুর কিনেছিলেন তার মালিকানা হারিয়ে ছিলেন এক ব্যক্তি। এর জের মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। তার পরেই ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়েছেন সুশান্ত দত্ত নামের এক প্রৌঢ়। থানার সামনেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার বিকালে ভাতার থানার সামনেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন ওই প্রৌঢ়। সুশান্ত দত্ত নামের ওই ব্যবসায়ীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় । তাঁকে নিয়ে আসা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় নিয়ে আসা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, সুশান্ত দত্ত একজন হোটেল ব্যবসায়ী। তাঁর বাড়ির পাশেই আছে পুকুর। বছর আটেক আগে ওই পুকুরটি স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে কিনেছিলেন তিনি। সেখানে মাছচাষ করেছিলেন তিনি। কিন্তু পুকুরের মালিকানা নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। এই বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। সম্প্রতি বর্ধমান জেলাশাসককে ওই পুকুর নিয়ে জটিলতার বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয় । শুনানি করেন জেলাশাসক। তাতেই পুকুরের মালিকানা হারান ওই ব্যক্তি। পুকুরের দখল নিতে না পারায় প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন সুশান্ত দত্ত বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
সুশান্ত পরিবার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পুকুরটি খাস জমিতে দাবি করে আদালতে মামলা করেন স্থানীয় কয়েকজন। তারপর থেকেই জটিলতার সূত্রপাত হয়। চলতি মাসেই স্থানীয় প্রশাসন শুনানির পরে জানিয়ে দেয় ওই পুকুরের মালিক সুশান্ত দত্ত নন। তাঁর ভাই তাপস দত্ত জানিয়েছেন, সোমবার বিকালে বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান সুশান্ত । তার পরেই তাপস জানতে পারেন যে তাঁর দাদা ভাতার থানার সামনে গায়ে আগুন দিয়েছেন।
ভাতার থানার পুলিশ জানিয়েছে, থানার গেটের কাছে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সুশান্ত দত্ত। তখনই ভাতার থানার পুলিশ কর্মী ও সিভিক পুলিশের নজরে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে থানা থেকে কম্বল বের করে তাঁরা আগুন নিভিয়ে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন । থানা চত্বরে ঢুকে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় পুলিশ ওই ব্যক্তির নামে একটি মামলাও রুজু করেছে।