এই সময়: তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি কার্যত মেনে নিয়ে ভারতের নির্বাচন কমিশন গত সপ্তাহেই আশ্বাস দিয়েছিল, আগামী তিন মাসের মধ্যে ডুপ্লিকেট এপিক সংক্রান্ত যাবতীয় বিভ্রান্তি দূর করা হবে। এ বার এই ডুপ্লিকেট এপিক নম্বর সংশোধনের জন্য বিভিন্ন জেলার ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারদের (ইআরও) দায়িত্ব দিল কমিশন।
এর ফলে কোনও ভোটারের এপিক নম্বর ডুপ্লিকেট হয়েছে কি না, তা এখন সরাসরি দেখে সংশোধন করতে পারবেন ইআরওরা। এই সুযোগ এতদিন তাঁদের ছিল না। শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনই সব রাজ্যের ভোটার পরিচয়পত্র দেখতে ও সংশোধন করতে পারত।
সোমবার নির্বাচন কমিশন সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে (সিইও) চিঠি দিয়ে ডুপ্লিকেট এপিক নম্বর সংশোধনের নয়া মডিউল জানিয়ে আগামী শুক্রবার, ২১ মার্চের মধ্যে সংশোধন শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে। এতদিন সিইও বা জেলায় ইআরও–রা নিজের রাজ্যের ভোটারদের পরিচয়পত্র বা এপিক দেখতে পারতেন না।
তাই এ রাজ্যের সঙ্গে অন্য রাজ্যের ভোটারের এপিক নম্বর মিলে যাওয়ার খবর নজরে আসেনি মুখ্য নির্বাচনী আাধিকারিকের দপ্তরের। কিন্তু পাসপোর্টের নথি যাচাইয়ের সময়ে পুলিশ প্যান–ইন্ডিয়া এপিক নম্বর যাচাই করার সময়েই ডুপ্লিকেট এপিকের বিষয়টি নজরে আসে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে সরব হতেই নির্বাচন কমিশন তা মেনে নিয়ে একশো দিনে অর্থাৎ ৭ জুনের মধ্যে ডুপ্লিকেট এপিক সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেয়।
নির্বাচন কমিশন নয়া নির্দেশিকায় অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের এপিক কোড নম্বর ব্যবহার করে ভিন রাজ্যের ভোটারের এপিক নম্বর হয়ে থাকলে সেই রাজ্যকেই তা সংশোধন করতে হবে। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের এপিক কোড যদি মহারাষ্ট্রের কোনও বাসিন্দার ভোটার কার্ডে ব্যবহার হয়ে থাকে, তা হলে তা সংশোধন করতে হবে মহারাষ্ট্রের সিইও এবং ইআরও–দের।
আবার গুজরাটের এপিক কোড ব্যবহার করে যদি বাংলার কারও ভোটার কার্ড তৈরি হয়, তা হলে তা পশ্চিমবঙ্গকেই ঠিক করতে হবে। এ জন্য ভোটারকে কারও কাছে যেতে হবে না। ইআরও নিজেই তা চিহ্নিত করে সংশোধন করবেন। সংশোধিত এপিক নম্বর দিয়ে ভোটারকে নতুন পরিচয়পত্র তৈরি করে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে। এই ভোটার পরিচয়পত্রের পিছনে বাতিল হওয়া এপিক নম্বরটি উল্লেখ থাকবে। যাতে ভোটারের এপিক নম্বর পরিবর্তন হওয়ায় সরকারি কাজে তাঁর কোনও সমস্যা না হয়।
সোমবার নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশিকা পেয়েই রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নির্বাচনী আধিকারিক দিব্যেন্দু দাস সব জেলাশাসক, এডিএম (ইলেকশন), ওসিদের (ইলেকশন) নিয়ে বৈঠক করেন। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ডুপ্লিকেট ভোটারের সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। যদিও ভোটার রয়েছে ৭ কোটি ৬৩ লক্ষ ৯৬ হাজার। দেখা গিয়েছে, আলফা নিউমেরিক বিভ্রান্তির জেরে পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের এপিক সবচেয়ে বেশি ডুপ্লিকেট হয়েছে হরিয়ানার সঙ্গে। দিল্লি, গুজরাট, পাঞ্জাবও রয়েছে।