• আবাস যোজনায় নাম জমা, বিতর্ক ব্লক প্রশাসনের অন্দরে
    এই সময় | ১৮ মার্চ ২০২৫
  • চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার

    সরকারি কোনও নির্দেশ নেই। তা সত্ত্বেও আবাস যোজনার জন্য গ্রামবাসীর নাম সংগ্রহ করছে ব্লক প্রশাসন। এই প্রকল্পে ঘর দিতে নতুন করে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের কাছ থেকে নাম জমা নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রে কোচবিহার–২ ব্লক।আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের তালিকা অনুযায়ী ঘর বরাদ্দ করা হয়।

    প্রথম দফায় বাড়ি তৈরির কাজও চলছে কোচবিহার জেলায়। এরই মধ্যে নতুন করে নাম সংগ্রহের খবর সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, গত ১৩ মার্চ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদের নিয়ে কোচবিহার–২ ব্লকের বিডিও বৈঠক করেন। ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং সমিতির কর্মাধ্যক্ষরা।

    সেখানেই প্রতি পঞ্চায়েত সদস্যের কাছ থেকে ১০ জন করে গ্রামবাসীর নাম চাওয়ার কথা বলা হয় প্রধানদের। সোমবার সেই তালিকা জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। এটা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে জেলায়। কোচবিহার–২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গায়ত্রী সরকার বলেন, ‘১৩ মার্চ একটি বৈঠক করে প্রধানদের বলা হয়েছিল, পঞ্চায়েত সদস্যদের কাছ থেকে নাম নিয়ে জমা দিতে হবে। প্রশাসনের নির্দেশেই এই কাজটা করা হচ্ছে।’

    অথচ জেলার অন্যান্য ব্লকে এমন কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসন এই ধরনের কোনও নির্দেশও দেয়নি। কোচবিহারে অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) সৌমেন দত্ত বলেন, ‘প্রথম কোটা অনুযায়ী জেলায় ১ লক্ষ ১৩ হাজার বাড়ি তৈরি হচ্ছে। এর বাইরে নতুন করে তালিকা জমা নেওয়ার নির্দেশ নেই। নাম সংগ্রহ করে জমা দেওয়ার কোনও পদ্ধতি নেই। সবটাই অনলাইনে হয়। একটি তালিকার বাড়ি তৈরি হচ্ছে। পরের তালিকা অটোমেটিকালি আসবে।’

    পরের তালিকা এখনও আসেনি, তা হলে কেন নাম নেওয়া হচ্ছে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তা যখন বলছেন, এমন কোনও নির্দেশই নেই, তা হলে কী ভাবে কোচবিহার–২ ব্লক এ ধরনের পদক্ষেপ করল? বিডিও বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘কয়েকজন গ্রামবাসী আবাস যোজনা থেকে বাদ গিয়েছেন শুনেছি। তাই তাঁদের নাম জমা দিতে বলেছি।’

    নতুন নাম নেওয়ার কোনও নির্দেশ কি প্রশাসন দিয়েছে? এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই একটি সমীক্ষা করে দেখে নেওয়া হচ্ছে, কত মানুষের নাম বাদ গিয়েছে।’ এর বেশি আর কিছু বলতে চাননি বিডিও।

    এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। বিজেপি অবশ্য নাম সংগ্রহ নিয়ে কোনও অভিযোগ তোলেনি। তারা নাম সংগ্রহের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের কথা বলেছে। দলের কোচবিহার জেলার কোষাধ্যক্ষ সুজিত দে বলেন, ‘কোচবিহার–২ ব্লকে আবাস যোজনার নাম নতুন করে জমা নিচ্ছে বিডিও অফিস। কিন্তু বিরোধী বিজেপির সদস্যদের কাছ থেকে নাম ঠিক ভাবে নেওয়া হচ্ছে না। এই বিষয়টি বিডিওকে আমরা জানিয়েছি।’ যদিও বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন।

  • Link to this news (এই সময়)