আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাত তখন তিনটে। আলো জ্বলছে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক কিংশুক সাধুখাঁর এজলাসে। ১২ মার্চ গ্রেপ্তার হওয়া আসামির বিচার হল পাঁচ দিন পরে গভীর রাতে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারকের আদালতে।
ঠিক কী ঘটেছিল? বারাসত আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ মার্চ জ্যোতিপ্রকাশ দাস নামে এক ব্যক্তিকে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। আইনগত ভাবে গ্রেপ্তার হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ধৃত ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করতে হয়। কিন্তু মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ গ্রেফতারের পাঁচ দিন পরে সোমবার রাতে তাঁকে পেশ করে। চার্জশিট লেখা হয় অসুস্থতার কারণে প্রথমে ধৃতকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও পরবর্তী সময়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। তাই, পুলিশ তাঁকে আদালতে পেশ করতে পারেনি। সোমবার প্রথমে ধৃতকে এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পেশ করা হয়। কিন্তু এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি অতিরিক্ত মুখ্য বিচারকের আদালতে স্থানান্তরিত করেন। অবশেষে রাত আটটা থেকে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক কিংশুক সাধুখাঁ রায়দান করেন। তিনি ব্যক্তিগত এক হাজার টাকা বন্ডে অভিযুক্তকে জামিনে মুক্তি দেন।
বারাসাত আদালতের আইনজীবী গৌরীশঙ্কর বর বলেন, 'কোনও ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাঁকে আদালতে হাজির করানোর নিয়ম। যদি কোন কারনে ধৃত ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন, পুলিশ তা আদালতকে জানাবে। মধ্যমগ্রাম এর ঘটনার ক্ষেত্রে তা হয়নি। ধৃতকে পাঁচ দিন পরে আদালতে তোলা হয়েছে। প্রায় সারারাত ধরে বিচার প্রক্রিয়া চলে। অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক কিংশুক সাধুখাঁ রাত সাড়ে তিনটের সময় মামলার রায়দান করেছেন। বারাসত আদালতের ইতিহাসে এ এক বেনজির ঘটনা।'
মামলার সরকারি কৌঁসুলি সান্তময় বসু বলেন, 'রাত সাড়ে তিনটে পর্যন্ত বিচার চলেছে, বারাসত জেলা আদালতের এমন ঘটনার নজির নেই। রাজ্যের নিরিখেও এমন ঘটনা শুনিনি। এককথায় নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল বারাসত আদালতে।'