বিধানসভায় আবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষের সাক্ষাৎ হল। কথা হল দুই নেতার। শুধু তা-ই নয়, একসঙ্গে দুপুরের ভোজও সারলেন তাঁরা। বিজেপি বিধায়কেরা দুই নেতাকে এক হয়ে লড়াই করার অনুরোধ করেন। সকলকে পাল্টা আশ্বাসও দেন শুভেন্দু-দিলীপ। পাশাপাশি, দলীয় বিধায়কদের জনসংযোগের টিপ্সও দিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি।
শুভেন্দু এবং দিলীপ বিজেপিশিবিরে ‘যুযুধান’ বলেই কানাঘুষো চলে। কিন্তু কখনওই প্রকাশ্যে কেউ কাউকে আক্রমণ করেননি। বরং মুখোমুখি হলে হাসিমুখে একে অপরকে অভ্যর্থনা জানান। মঙ্গলবার বিধানসভাতেও সেই ছবির অন্যথা হল না। দুপুরে বিধানসভায় যান দিলীপ। পরিষদীয় দলের বৈঠকে মধ্যমণি ছিলেন তিনিই।
শুভেন্দু ছাড়াও শঙ্কর ঘোষ, বিশাল লামা-সহ সব বিধায়ক মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। শুভেন্দু, দিলীপকে একসঙ্গে দেখে যে সকলেই খুশি, তা এক স্বরে বুঝিয়ে দিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, বিধায়কেরা দিলীপ এবং শুভেন্দুকে এক হয়ে লড়াই করার অনুরোধ করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘দিলীপদা, শুভেন্দুদা আপনারা এক হয়ে লড়াই করলে আমরা তৃণমূলকে হারিয়ে বাংলা দখল করতে পারব।’’ বিধায়কদের কথা শুনে তাঁদের এক হয়ে লড়াই করার আশ্বাসও দেন দুই নেতা। তাঁরা বলেন, ‘‘আমরা একসঙ্গেই আছি।’’
বিধানসভা ভোটে জিততে গেলে মানুষের মন জয় করতে হবে, দলীয় বিধায়কদের সেই বার্তা দেন দিলীপ। সূত্রের খবর, দিলীপ বিধায়কদের বলেন, ‘‘নিজের এলাকাতে ভাল করে কাজ করুন। দলকে এ বার জেতাতে হবে।’’ প্রাক্তন সাংসদ মনে করেন, জনসংযোগই আসল বিষয়। বিধায়কদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় চা-চক্র করুন। বাজারে বেরিয়ে ঘুরে আসুন। লোকের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করুন। জনসংযোগের দিকে লক্ষ্য দিন।’’
সাত মাসের বেশি সময় পর বিধানসভায় এলেন দিলীপ। শেষ বার নিজের জন্মদিনে ১ অগস্ট বিধানসভায় এসেছিলেন তিনি। সেই দিন গেরুয়া উত্তরীয় পরিয়ে দিলীপকে শুভেচ্ছা জানান শুভেন্দু!
সামনেই রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা করার কথা বিজেপির। সুকান্তই রাজ্য সভাপতি থাকবেন, না কি তাঁর জায়গায় অন্য কাউকে আনা হবে, সেই প্রশ্ন ঘুরছে বিজেপির অন্দরেই। কেউ কেউ আবার রাজ্য সভাপতি হিসাবে দিলীপের কথা বলছেন। সেই জল্পনার মাঝেই মঙ্গলবার পরিষদীয় বৈঠকে যোগ দেন দিলীপ। রাজ্য সভাপতি কে হবেন, সেই প্রশ্নে তাঁর স্পষ্ট জবাব, ‘‘দল যাঁকে যোগ্য মনে করবে, তাঁকেই দায়িত্ব দেবে।’’ পরে শুভেন্দুকে জিজ্ঞাসা করা হয়, দিলীপের সঙ্গে বিধানসভায় তাঁর মধ্যাহ্নভোজের কোনও রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে কি না? সেই প্রশ্নের উত্তরে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘প্রত্যেক অধিবেশনেই দিলীপ ঘোষ আসেন। কখনও আমার সঙ্গে দেখা হয়, কখনও মিস্ হয়ে যায়। তখন অনেক সংবাদমাধ্যম লেখে দিলীপ ঘোষ এসেছেন, তাই শুভেন্দু নেই। এ বার যাতে তেমন কিছু লিখতে না পারে, তাই আমরা দু’জনে (দিলীপ ও শুভেন্দু) পরিকল্পনা করে একসঙ্গে বিধানসভায় এসেছি।’’