শোভনদেব-হুমায়ুন ১৫ মিনিট বৈঠক, শৃঙ্খলার পাঠ দিলেন প্রবীণ মন্ত্রী, মানলেন বিধায়ক, পরে নওশাদ-সাক্ষাতে কবীর
আনন্দবাজার | ১৮ মার্চ ২০২৫
ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে ডেকে দলীয় শৃঙ্খলার পাঠ দিলেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শোভনদেবের সঙ্গে প্রায় ১৫ মিনিটের বৈঠকশেষে হুমায়ুন জানিয়ে দিলেন, তিনি দলের শৃঙ্খলা, দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলবেন। গত কয়েক দিন ধরে যে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছিল হুমায়ুনকে ঘিরে, মঙ্গলবারের পরে তা কাটতে চলেছে বলেই তৃণমূলের পরিষদীয় দল সূত্রে ইঙ্গিত। শোভনদেবের সঙ্গে ওই বৈঠকের পরেই বিধানসভার অলিন্দে হুমায়ুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয় আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির।
সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের পাল্টা হুমায়ুনের বক্তব্য ঘিরে ‘বিতর্ক’ তৈরি হয়। শুভেন্দুর সমালোচনা করার পাশাপাশিই হুমায়ুনকে শো কজ় করে তৃণমূলের পরিষদীয় দল। এক পাতার শো কজ় চিঠির জবাবে দু’পাতার জবাব দেন ভরতপুরের বিধায়ক। কিন্তু সেই জবাবে দুঃখপ্রকাশ না করে বরং বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি যা বলেছিলেন সেই অবস্থান থেকে সরছেন না। এ-ও স্পষ্ট করেছিলেন, দলের থেকে তাঁর কাছে ‘জাত’ আগে।
হুমায়ুনের ওই জবাবে সন্তুষ্ট ছিলেন না তৃণমূলের পরিষদীয় দলের নেতৃত্ব। পরিষদীয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে হুমায়ুনকে মঙ্গলবার ডেকে পাঠিয়েছিলেন শোভনদেব। দু’জনের মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট কথা হয়। পরে শোভনদেব বলেন, ‘‘আমি ওঁকে বুঝিয়েছি, শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। এটা নেত্রীর নির্দেশ। আমাকেও সেই শৃঙ্খলা মানতে হবে, ওঁকে মানতে হবে, সবাইকেই মানতে হবে। এর বাইরে কিছু করা যাবে না।’’ শোভনদেব আরও বলেন, ‘‘ওঁকে বোঝানোর পর উনি বুঝেছেন। কথা দিয়েছেন, এমন কিছু বলবেন না, যাতে দলের অস্বস্তি হয়।’’
শোভনদেবের সঙ্গে বৈঠকের পরে হুমায়ুন বলেন, ‘‘শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে আমি খুশি। শোভনদেববাবু যে ভাবে আমায় বুঝিয়ে বলেছেন, তা আমার ভাল লেগেছে। আমি বলেছি, আমি দলের বিধায়ক হিসাবে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলব, নেত্রীর নির্দেশ মেনে চলব।’’
হুমায়ুন হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলেন, শুভেন্দুকে তিনি মুর্শিদাবাদে ঢুকতে দেবেন না। তিনি জাতীয় সড়ক ধরে যাওয়ার চেষ্টা করলে ভরতপুর থেকেই তাঁকে রানাঘাটের দিকে পাঠিয়ে দেবেন। বিজেপি পাল্টা চ্যালেঞ্জ নিয়ে ঘোষণা করেছে, আগামী ১৩ এপ্রিল শুভেন্দুকে মুর্শিদাবাদ জেলায় নিয়ে গিয়ে তারা কর্মসূচি করবে। সেই প্রসঙ্গে হুমায়ুন মঙ্গলবার বলেন, ‘‘এখন এ সব কিছু বলব না। ১৩ তারিখ আসুক, তার পর দেখা যাবে।’’
মঙ্গলবার বিধানসভার অলিন্দে হুমায়ুন এবং নওশাদকে কথা বলতেও দেখা যায়। দু’জনেই হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তার পর হুমায়ুন বলেন, ‘‘এটাই সৌজন্য। বিধানসভা ভবনের অভ্যন্তরে আমরা সবাই এক। আমরা বিধায়ক।’’