ফের আক্রান্ত পুলিশ। এ বার মদ্যপদের মারামারি থামাতে গিয়ে মাথা ফাটল পুলিশ কর্মীর। উত্তেজিত জনতা ভাঙল পুলিশের গাড়ি। ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার সাগরপুর। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় গভীর রাতে গ্রামে হানা দেয় পুলিশ। সংঘর্ষ ও পুলিশকে মারধরের ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সাগরপুর গ্রামে মঙ্গলবার পুজো ও হরিনাম সংকীর্তন ছিল। অভিযোগ, রাত বাড়তেই গ্রামের একদল মদ্যপ যুবকের মধ্যে গোলমাল বাধে। গোলমাল থামাতে দাসপুর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশের বড় বাহিনী গ্রামে ঢোকে। সেই সময়ই ধাক্কাধাক্কিতে এক যুবক পড়ে গিয়ে গুরুতর চোট পান।
গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশের মার খেয়েই ওই যুবক পড়ে গিয়ে জখম হন। তড়িঘড়ি তাঁকে প্রথমে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল ও সেখান থেকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যদিও পুলিশের দাবি, মদ্যপদের মারামারিতেই জখম হন ওই যুবক।
ওই যুবক জখম হতেই এলাকার লোকজন পুলিশ কর্মীদের ঘিরে ফেলেন। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের প্রবল বচসা বাধে। ক্রমে এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। এরই মধ্যে এক পুলিশ কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা।
পুলিশ কর্মীদের গালিগালাজের পাশাপাশি পুলিশের গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। গোলমাল থামাতে বড় বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ঘাটাল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অনিমেষ সিংহ রায়, ঘাটালের সার্কল ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ মণ্ডল। নামানো হয় র্যাফ।
ভোর অবধি গ্রামের ভিতরে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতের ওই অশান্তি এবং পুলিশের উপর আক্রমণ চালানোর পিছনে এই ১৪ জনের সক্রিয় ভূমিকা ছিল বলে মনে করছে পুলিশ। বুধবার ভোর থেকেই এলাকায় টহল দিচ্ছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। আহত পুলিশ কর্মী চিকিৎসাধীন আছেন ঘাটাল মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।
মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, অশান্তি থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ দিন সকালেও থমথমে এলাকা। গ্রামে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট।
গত কয়েক দিনে বার বার পুলিশের উপর হামলার ছবি দেখা গিয়েছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। গত ১১ মার্চ বীরভূমের রাজনগরে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে। কিছু দিন আগেই নকল কয়েনের কারবার বন্ধ করতে লাভপুর থানার পুলিশ আক্রান্ত হয়।
তার আগে দুই গোষ্ঠীর ঝামেলা থামাতে গিয়ে বীরভূমেরই সিউড়ি থানার আইসির কলার ধরে টানাটানি করা হয়। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে গ্রামে চলা তারস্বরে মাইক থামাতে গিয়ে ইটের আঘাতে মাথা ফাটে হুগলির পান্ডুয়া থানার এএসআই-এর।