সুশান্ত বণিক, আসানসোল
রানিগঞ্জ খনি এলাকায় ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প রূপায়ণে দেরির কারণ জানতে চেয়ে রাজ্যসভায় সরব হলেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। সোমবার রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় কয়লা ও খনিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডির কাছে শমীক জানতে চান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত কেন করা গেল না।
জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি না হওয়া ও আবাসন নির্মাণে বিলম্ব হওয়াতেই প্রকল্প রূপায়ণ করা যায়নি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগেই পুনর্বাসন প্রকল্প সম্পূর্ণ করার দাবি তুলেছেন শমীক। না হলে এ নিয়ে আন্দোলনে নামবেন বলেও জানিয়েছেন পদ্ম শিবিরের সাংসদ।
কয়লামন্ত্রীর কাছে শমীক জানতে চান, রানিগঞ্জ মাস্টার প্ল্যান সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালে। কিন্তু পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই কাজ শেষ হয়নি। প্রকল্পের খরচও বেড়েছে কয়েকগুন। শমীক উল্লেখ করেন, প্রায় ৩০ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়ার কথা থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতি কী?
বহুতল আবাসন নির্মাণ ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি চিহ্নিতকরণের কাজ কবে শেষ হবে? শমীকের এ সব প্রশ্নের উত্তরে কয়লামন্ত্রী জানিয়েছেন, জনসংখ্যা পঞ্জিকরণ ও পুনর্বাসন প্রকল্প তৈরির জন্য পর্যাপ্ত জমি চিহ্নিতকরার কথা এডিডিএ–র। মাস্টারপ্ল্যান তৈরির সময়ে বলা হয়েছিল, ইসিএলের এলাকায় বসবাসকারী শ্রমিক–কর্মচারীদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেবে ইসিএল।
অন্য দিকে, ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের যাবতীয় ব্যবস্থা করবে এডিডিএ। তবে তার খরচ দেবে কয়লা মন্ত্রক। তবে ধস কবলিত এলাকায় বসবাসকারী বৈধ জমি–বাড়ির মালিকদের বিস্তারিত তালিকা এখনও তৈরি করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বহু বাসিন্দার জমি–বাড়ির বৈধ দলিল নেই। তাঁরা হয় সরকারি জমি দখল করে না হলে পূর্বপুরুষের জমিতে বসবাস করছেন।
ওই সব পরিবারগুলিকে বহুতল আবাসনে দুই কামরার ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। যাঁদের বৈধ দলিল রয়েছে, তাঁদের দুই কামরার ফ্ল্যাটের সঙ্গে ক্ষতিপূরণ বাবদ জমি–বাড়ির জন্য আর্থিক মুল্য দেওয়া হবে। তবে এই কাজ দ্রুত শেষ করতে রাজ্য সরকারও কিছু পদক্ষেপ করেছে বলে উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী প্রায় সাড়ে চার হাজার আবাসন তৈরি করা হয়েছে। এডিডিএ এখনও পর্যন্ত পুনর্বাসন প্রকল্প রুপায়ণ করার জন্য জেলার পাঁচটি অঞ্চলে ১৫১ একর জমি চিহ্নিত করেছে। এখনও পর্যন্ত দলিলহীন প্রায় ১৪৫টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে বহুতল আবাসনে পুনর্বাসন দেওয়া গিয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।