• কালিয়াচক থেকে উদ্ধার নবগ্রামের অপহৃত যুবক
    এই সময় | ১৯ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়, নবগ্রাম: যেন সিনেমার দৃশ্য! একটি গাড়ির জন্য চলল গুলি। করা হলো অপহরণও!

    মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে গুলিচালনা ও অপহরণের ঘটনায় এমনই চমকপ্রদ তথ্য মিলেছে। সোমবার রাতের ওই ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কিনারা করে ফেলে নবগ্রাম থানার পুলিশ। অপহৃত যুবক ইন্দ্রজিৎ ঘোষকে পাশের জেলা মালদার কালিয়াচকের একটি লিচুবাগান থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আবু হানিফ নামে মালদারই সুজাপুরের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতকে লালবাগ এসিজেএম আদালতে হাজির করলে বিচারক সুমন দাস সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

    পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে একটি গাড়ি। ফিনান্স কোম্পানির কর্মী, মুর্শিদাবাদ থানার ইচ্ছাগঞ্জের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ গাড়ি কেনাবেচার সঙ্গেও জড়িত। কিছু দিন আগে একটি অ্যাপে গাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন তিনি। তা দেখে যোগাযোগ করেন হানিফ। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে ৪ লক্ষ ৭২ হাজার নিয়ে নিলেও গাড়ি দেননি ইন্দ্রজিৎ। পরে সেই গাড়িটিই ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় জিয়াগঞ্জের মিঠুন মণ্ডলকে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

    মিঠুন নিজেও গাড়ি বেচাকেনার সঙ্গে যুক্ত। ওই গাড়িটি কিনেই তিনি সেটি নবগ্রামের পলসণ্ডা মোড়ের একটি গ্যারাজে দেন। সে কথা জানতে পারেন হানিফ। ইতিমধ্যে ইন্দ্রজিতের ভাই একটি মোটরবাইক বিক্রির জন্য মিঠুনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেন। তা জানতে পেরে হানিফ ছক কষে তাঁর এক সঙ্গী মুস্তাফিজুর শেখ ওরফে নিহালকে কাজে লাগান ওই মোটরবাইক কেনার জন্য।

    ওই মোটরবাইক কিনতে আসার আসল উদ্দেশ্য ছিল ইন্দ্রজিতের নাগাল পাওয়া। সেই মতো সোমবার সকালেই রওনা দেন হানিফ-নিহালরা। দুপুরে নবগ্রামের পলসণ্ডায় পৌঁছে গাড়ি নিয়ে পুরো এলাকা রেকি করেন তাঁরা। সোমবার বিকেলে মুর্শিদাবাদ থানার ডাহাপাড়া ঘাটের কাছে নিহাল মোটরবাইকটি নেন। কিন্তু টাকা মিটিয়ে তিনি জানান, এত ভারী মোটর বাইক তিনি চালাতে পারবেন না। তাঁর এক দাদা পলসণ্ডা মোড়ে অপেক্ষা করছে, সেখানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। সেই অনুরোধ রাখতেই ইন্দ্রজিৎ পলসণ্ডা মোড়ে গিয়েছিলেন। এর পরে বন্ধু দীপ্তেশ মণ্ডলের মোটর বাইকের পিছনে বসে লালবাগের বাড়িতে ফিরছিলেন ইন্দ্রজিৎ। তখনই ধাওয়া করে হানিফদের গাড়ি তাঁদের ধাক্কা মারে। গুলি চালানো হয়। দীপ্তেশের পায়ে গুলি লাগে। ইন্দ্রজিতকে অপহরণ করে পালায় হানিফরা।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হানিফকে সুজাপুরে তাঁর গাড়ির গ্যারাজ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। লালবাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রসপ্রীত সিং বলেন, 'কালিয়াচক ও নবগ্রাম থানার পুলিশ অফিসারদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। ঘটনায় এক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'

  • Link to this news (এই সময়)