ট্যাংরার দে ব্রাদার্সের কিশোরের ভবিষ্যৎ কী? একমাস কেটে গেলেও দায়িত্ব কেউ নিল না
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৯ মার্চ ২০২৫
ট্যাংরা হত্যা কাণ্ডের একমাস পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বেঁচে যাওয়া কিশোরের কী হবে? কে দায়িত্ব নেবে? এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। ওই কিশোরকেও মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সে মৃত ভেবেছিল সকলে। সেটা বুঝতে পারেনি দে ব্রাদার্স। ফলে সে বেঁচে গিয়েছে। রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের পক্ষ থেকে ওই কিশোরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে হয়েছে। কিন্তু কোনও রফাসূত্র বের হয়নি। চিকিৎসার জন্য একমাস হাসপাতালে থাকা ওই কিশোরের এখন কী হবে তা নিয়ে চিন্তিত তদন্তকারীরা।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইএম বাইপাসের অভিষিক্তা মোড়ে সজোরে একটি স্তম্ভে ধাক্কা মারার পর গোটা ঘটনা সামনে আসে। দে ব্রাদার্সের গাড়ি ধাক্কা মেরেছিল। তাতেই দুই ভাই প্রসূন এবং প্রণয় দে ও তাঁর কিশোর ছেলে আহত হন। এই ঘটনার তদন্তে নেমে প্রসূনদের ট্যাংরার অটল শূর রোডের বাড়ি থেকে সুদেষ্ণা দে, রোমী দে এবং তাঁর মেয়ের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেনার দায়ে পরিকল্পনা করেই সকলকে খুন করা হয়। আর গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে নিজেরা আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। প্রাথমিক জেরায় প্রসূন ও প্রণয় পুলিশের কাছে এই দাবি করেন।
ওই পরিবারটির প্রায় ১৬ কোটি টাকা বাজারে দেনা হয়েছিল। বিপুল টাকা ঋণ শোধ করতে না পেরে স্ত্রীদের জানিয়ে তাঁরা সপরিবার আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। দুই ভাইয়ের দুই স্ত্রী মারা গিয়েছে। মেয়ে মারা গিয়েছে। কিন্তু বেঁচে গিয়েছে কিশোর। আর দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন এখন সুস্থ হয়ে জেলে বন্দি। খুনের অভিযোগে প্রসূণকে গ্রেফতার করে ট্যাংরা থানার পুলিশ। এখনও হাসপাতালে আছেন বড় ভাই প্রণয় এবং তাঁর কিশোর ছেলে। প্রণয়কে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হলে তাঁকেও গ্রেফতার করা হবে। তাহলে ওই কিশোরটির দায়িত্ব কে নেবে? এখন এটাই বড় প্রশ্ন।
ওই কিশোরের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন রাজ্য শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী। তিনিও কিশোরের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিশোরের কাকিমার বাপের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন অনন্যা দেবী। কাকিমার মা–বাবার কাছে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ কিশোর করলেও জানা গিয়েছে, ওই পরিবারের লোকজনকে কিশোরের দায়িত্ব নিতে রাজি করানো যায়নি। এই বিষয়ে অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওই কিশোরের কাকিমার মা–বাবার বাড়ির দিকের লোকজনরাই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন বলে আমাদের জানান। তাঁরা কিশোরের দায়িত্ব নিতে রাজি হননি।’ সুতরাং কিশোরকে সরকারি হোমে রাখা ছাড়া অন্য কোনও উপায় দেখা যাচ্ছে না।