তথ্য কমিশনের দুই সদস্য হিসাবে এলেন রাজীব-জায়া এবং প্রাক্তন সাংসদ, বৈঠক বয়কট শুভেন্দুর
আনন্দবাজার | ১৯ মার্চ ২০২৫
পশ্চিমবঙ্গের তথ্য কমিশনের নতুন দুই সদস্যের নাম চূড়ান্ত হয়ে গেল বুধবার। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে সদস্য মনোনয়নের বৈঠক হয়। পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ওই বৈঠকে যোগ দেননি। আট জনের তালিকা থেকে চূড়ান্ত ভাবে মনোনীত হয়েছেন সঞ্চিতা কুমার এবং মৃগাঙ্ক মাহাতো। প্রাক্তন আয়কর আধিকারিক সঞ্চিতা চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, তিনি রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের সহধর্মিণী।
প্রসঙ্গত, মৃগাঙ্ক ২০১৪ সালে পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। শাসকদলের প্রাক্তন সাংসদের ওই তথ্য কমিশনে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বিরোধী শিবির প্রশ্ন তোলার তোড়জোড় করছে। তবে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, বর্তমানে মৃগাঙ্ক আর দলের সঙ্গে যুক্ত নন। তাই সরকারি কমিটিতে তাঁর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠার কথা নয়। যদিও বিরোধীদের মতে, এই নিয়োগে ‘স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের তথ্য কমিশনার পদে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি শ্রীবীরেন্দ্র। নতুন দুই সদস্য নিয়োগের ফলে কমিশনের কাঠামো আরও মজবুত হল বলেই জানাচ্ছে সরকার পক্ষ। তবে বিরোধী দলনেতা ওই বৈঠকে না-থাকায় বিরোধী শিবির বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করার অবকাশ পেয়েছে। আরজি করের ঘটনা উল্লেখ করে শুভেন্দু ওই বৈঠক বয়কট করেছেন। নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেছিলেন, ‘‘পুলিশকে দিয়ে আরজি করের ঘটনার তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে। ফলে তদন্ত আর এগোতে পারেনি। যত দিন না নির্যাতিতা বোনটি বিচার পাচ্ছে এবং অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে, তত দিন আমি রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর (পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র দফতর মুখ্যমন্ত্রী মমতারই অধীন) সঙ্গে কোনও বৈঠকে যোগ দেব না।’’
প্রসঙ্গত, তথ্য কমিশনার নিয়োগের বৈঠক বিরোধী দলনেতা আগেও বয়কট করেছেন। ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর তথ্য কমিশনার নিয়োগের জন্য মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সেই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেননি বিরোধী দলনেতা। তখন তাঁর অভিযোগ ছিল, বৈঠকের মাত্র এক দিন আগে, অর্থাৎ ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাঁকে বৈঠকের বিষয়ে জানানো হয়েছিল, যা কাম্য নয়। নিয়ম অনুযায়ী, তথ্য কমিশনার পদপ্রার্থীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য কমিটির সদস্যদের আগাম জানানো উচিত, যা ওই ক্ষেত্রে করা হয়নি বলেই শুভেন্দু তখন অভিযোগ করেছিলেন। ২০২৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আবার তথ্য কমিশনার নিয়োগের বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকেও শুভেন্দু অনুপস্থিত ছিলেন। তখন তিনি ওই নিয়োগপ্রক্রিয়াকে ‘অবৈধ’ বলে দাবি করেছিলেন। তখন তাঁর অভিযোগ ছিল, ওই নিয়োগের আগে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার রীতি আছে, যা ওই ক্ষেত্রে মানা হয়নি।