• পানীয় জলের পাম্প খারাপ, মিড-ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে মুড়ি-চানাচুর
    এই সময় | ২০ মার্চ ২০২৫
  • বুদ্ধদেব বেরা

    ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে প্রাইমারি স্কুলের পানীয় জলের পাম্প। পাম্প ঠিক করার জন্য স্কুল ইন্সপেক্টরের অফিস থেকে শুরু করে পুরসভা, ডিপিএসসি-তে আবেদন করা হয়েছিল। মহকুমা শাসক, জেলাশাসকের দপ্তরেও আবেদন জানানো হয়েছি, কিন্তু সমস্যার সুরাহা হয়নি বলে দাবি স্কুলের। এ দিকে জল না থাকায় মিড-ডে মিলের রান্না করাও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে দাবি স্কুলের। এই অবস্থায় ভুগতে হলো ছোট্ট পড়ুয়াদের। মিড-ডে মিলে রান্না করা খাবারের পরিবর্তে পড়ুয়াদের দেওয়া হলো মুড়ি-চানাচুর। বুধবার ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরা এলাকার নিউ টাউনশিপ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।

    ঝাড়গ্রাম পশ্চিম চক্রের স্কুল ইন্সপেক্টরের অফিস থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে পড়ে এই প্রাইমারি স্কুলটি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কমলা বেরা বলেন, ‘মিড-ডে মিলের রান্নার জন্য স্কুল থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে ঘোড়াধরা পার্ক থেকে জল বয়ে নিয়ে আসতে হয়। রান্নার পরে থালা বাসন ধোয়ার জন্য সহায়ক দলের মহিলাদের সাথে বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও চলে যায় পার্কে। পর্যাপ্ত জল না থাকায় ঠিকমতো মিড-ডে মিল রান্না সম্ভব হচ্ছিল না। এতদূর থেকে জল নিয়ে এসে রান্না করতেও চাইছিলেন না সহায়ক দলের দিদিরা। তাই পড়ুয়াদের মুড়ি,চানাচুর খাওয়ানো হয়েছে। পাম্প সারাই না হওয়া পর্যন্ত এ ভাবেই চলবে।’ সহায়ক দলের সদস্যা মুক্তা রানা ও রিক্তা রানার বলেন, ‘এত দূর থেকে জল বয়ে রোজ রোজ রান্না করা সম্ভব নয়। খুব কষ্ট হয় আমাদের। রাতে প্রচুর হাত পা যন্ত্রণা করে।’

    নিউ টাউনশিপ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৫২ জন পড়ুয়া রয়েছে। প্রি-প্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস হয়। প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে আরও তিনজন শিক্ষিকা রয়েছেন। ২৮ বছর ধরে এই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন রঞ্জু সাঁতরা। তিনি বলেন, ‘ঝাড়গ্রাম পুরসভার মধ্যে আমাদের স্কুলেই প্রথম মিড-ডে মিল চালু হয়েছিল। আগেও বহুবার পাম্প খারাপ হয়েছে। কিন্তু এতদিন ধরে কখনও পড়ে থাকেনি।’ এ দিন চার কিলো মুড়ি ,দুই প্যাকেট চানাচুর, এক কিলো পেঁয়াজ ও আড়াইশো গ্রাম সর্ষের তেল নিয়ে আসা হয়েছিল মিড-ডে মিলের জন্য।

    ঝাড়গ্রাম পশ্চিম চক্রের স্কুল ইন্সপেক্টর সৌমিত্র নন্দী বলেন, ‘আমাদের হাতে সিএসজি তহবিল ছাড়া আর কোনও তহবিল নেই। কয়েকদিন আগে এসেছিল প্রতিটি স্কুলকে দেওয়া হয়েছে। মিড ডে মিলের বিষয়টি পুর এলাকায় পুরসভা দেখভাল করে। পুরসভাকে বিষয়টি জানিয়ে আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’

    এই স্কুলে যখন মিড-ডে মিলের এমন অবস্থা। তখন উল্টো ছবি পূর্ব মেদিনীপুরে তমলুক থানার অন্তর্গত খারু ইউনিয়ন হাইস্কুলে। পড়ুয়াদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে বিরিয়ানি খাওয়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত খরচ বয়েছেন শিক্ষকরাই। পঞ্চম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ১২০০ ছাত্র-ছাত্রীদের মিড-ডে মিলে বিরিয়ানি খাওয়ানো হয়েছে।

    তথ্য সহায়তা: রঞ্জন মাইতি

  • Link to this news (এই সময়)